মানবতাবিরোধী অপরাধ: ফেনীর তিন আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত

তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক হান্নান খানমানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফেনীর নুর মোহাম্মদসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। বাকি দু'জন হলো, তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তজু (৬৭) ও আবু ইউসুফ (৭১)। তিন জনের মধ্যে নুর মোহাম্মাদ গ্রেফতার আছে। বাকি দু’জন পলাতক।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম এ হান্নান খান এ তথ্য জানান।

তদন্ত সংস্থার ৭০তম তদন্ত প্রতিবেদন ছিল এটি। ৯১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়। তদন্তকালে আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত অপরাধ সংগঠনের তথ্য পাওয়া যায়। আসামিরা একাত্তরে ফেনী সদর থানাধীন ফকিরহাট বাজার ও উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, লুট, হত্যা ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলো হলো:

১.  একাত্তরের ২৯ এপ্রিল সকালে রাজাকার তোফাজ্জল হোসেন ৭/৮ জন নিয়ে ফেনী সদরের ফকিরহাট বাজারে আবুল হোসেনের দোকানে হামলা করে। তোফাজ্জল রাইফেল দিয়ে উত্তর ধলিয়ার গোলাম রব্বানীকে গুলি করে আহত করে ও আবুল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে। আসামিরা ফকিরহাট বাজারের ১০/১৫টি দোকানে লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করে। তারপর তোফাজ্জল আবুল হোসেনের মৃতদেহ তার দোকানের জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করে।

২.  একাত্তরের ১০ আগস্ট রাতে আবু ইউসুফসহ ৫/৬ জন সশস্ত্র রাজাকার উত্তর গোবিন্দপুরের আব্দুর রউপ মেম্বারের বাড়ি লুট করে। তোফাজ্জল, আবু ইউসুফ, নুর মোহাম্মদসহ অন্যান্য রাজাকাররা উত্তর গোবিন্দপুরের নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালি ও মুক্তিযযুদ্ধের সমর্থক শামছুল হক, আব্দুল হক, মুজিবুল হক (মৃত) ও আব্দুর রউপকে (মৃত) অপহরণ করে অমানসিক নির্যাতন করে। একইদিন রাতে তিন আসামি উত্তর গোবিন্দপুরের আব্দুল ওহাবকে আটক করে এবং রাজাকার তোফাজ্জলের নির্দেশে রাজাকার আবু ইউসুফ আব্দুল ওহাবকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়াও কালিদহ বড়দাহ প্রসন্ন রায় জমিদার বাড়ির ক্যাম্পে কয়েকজনকে আটক রেখে নির্যাতন করা হয়।