২১ অক্টোবর দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনানি ঘটে। এরপর মোস্তফার অভিযোগের ভিত্তিতে ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)। ঘটনার ২২ দিন পর সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিমানবন্দর এলাকার সাইটডিস রেস্টুরেন্টের সামনে থেকে ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয়দানকারী চক্রের মূলহোতা মিজানুর রহমান ওরফে বাচ্চু (৪২) ও তার সহযোগী নূর আমিন মোল্লা (৩১) এবং সজিব আহম্মেদকে (২৬)গ্রেফতার করে র্যাব-১। এসময় তাদের কাছ থেকে দু’টি ওয়ানশুটার গান, একটি প্রাইভেটকার, একটি ওয়াকিটকি সেট উদ্ধার করা হয়। এই চক্রের আরও ৪/৫ জন এখনও পলাতক রয়েছে।
র্যাব-১ এর কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-১) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. কামরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ডিবি পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করতো। ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারীদের টার্গেট করতো তারা। টাকা তুলে ব্যাংক থেকে কেউ বের হওয়ার পর ডিবি পরিচয়ে অপহরণ করে নির্জন জায়গায় নিয়ে টাকা রেখে তাকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যেত।’
তিনি বলেন, ‘এ চক্রের মূলহোতা বাচ্চুসহ তিনজনকে আমরা আটক করতে সক্ষম হয়েছি। তবে এই চক্রের নেতৃত্বে থাকা শ্যামল ওরফে সবুজ ওরফে সুলতানসহ ৪/৫ জন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।’
জিজ্ঞাসাবাদে বাচ্চু জানায়, সে আগে একটি বেসরকারি ফার্মে চাকরি করতো। এরপর গার্মেন্টসের সোয়েটার কেনাবেচা করতো। তার বন্ধু শ্যামলকে নিয়ে এই চক্রটি গঠন করে।
চক্রের অপর সদস্য নূর আমিন মোল্লা পেশায় একজন প্রাইভেটকার চালক। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ছিনতাই করতে প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে আসতো সে। এজন্য পেতো ২০ হাজার টাকা। টাকার লোভে শ্যামলের মাধ্যমে এই চক্রে জড়ায় সে।
জিজ্ঞাসাবাদে সজিব আহম্মেদ জানায়, সেপ্টেম্বরে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সে। তার কাজ ছিল টার্গেটে করা ব্যক্তিকে গাড়িতে ওঠানো। এজন্য প্রতি অপারেশনে ৩০ হাজার টাকা পেতো সে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে.কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এই চক্রটি বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকদের অপহরণ ও অর্থ ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করতো। চক্রের সদস্যরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে থাকতো। একজন ব্যাংকের ভেতরে গ্রাহকদের টার্গেট করতো। বেশি টাকা উত্তোলনকারীর বিষয়ে চক্রের সদস্যদের কাছে তথ্য দিতো। এরপর বাইরে থাকা সদস্যরা ওই ব্যক্তি ফলো করে ডিবি পরিচয় দিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে টাকা ছিনিয়ে রেখে নির্জন স্থানে তাকে ফেলে দিত।
তিনি বলেন, তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।