ড. ইউনূসসহ ৪ জনকে শ্রম আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ

ড. মুহম্মদ ইউনূস (ফাইল ছবি)শ্রম আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৪ জনকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার অন্য বিবাদীরা হলেন গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজনীন সুলতানা, উপ-মহাব্যবস্থাপক (জিএম) গৌরি শংকর ও পরিচালক আ. হাই খান। এই চার জনকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক রহিবুল ইসলাম এই নির্দেশ দেন।

এর আগে, গত ৫ জানুয়ারি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে  ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করেন ওই দিন বিচারক মামলার আদেশ পরে দেবেন বলে জানান।

এজাহারে বলা হয়েছে, বাদী ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিষ্ঠানে ১০টি বিধির লঙ্ঘন দেখতে পান। একই বছরের ৩০ এপ্রিল আগের পরিদর্শকও সরেজমিন গিয়ে একইভাবে বিধি লঙ্ঘন দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি বিষয়গুলো সংশোধন করতে বলেছিলেন। কিন্তু ওই বছরের ৭ মে ডাকযোগে এ বিষয়ে বিবাদীপক্ষ যে জবাব দেয়, তা সন্তোষজনক হয়নি। ২৮ অক্টোবর বর্তমান পরিদর্শক (মামলার বাদী) আবারও বিবাদী পক্ষকে বিষয়টি জানান। তখন বিবাদী সময় চাইলেও সেই অনুযায়ী তারা জবাব দাখিল করেননি। এতে প্রতীয়মান হয়, বিবাদীরা শ্রম আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। এ অবস্থায় বিবাদীরা ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬’, ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন ২০১৩-এর ধারা ৩৩(ঙ)’ এবং ৩০৭ অনুযায়ী অপরাধ করেছেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কোম্পানির বিরুদ্ধে যে ১০টি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো হলো—

১. বিধি অনুযায়ী শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগপত্র, ছবিসহ পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বই দেওয়া হয়নি।

২. বিধি অনুযায়ী শ্রমিকের কাজের সময়ের নোটিশ পরিদর্শকের কাছ থেকে অনুমোদিত নয়।

৩. কোম্পানিটি বার্ষিক ও অর্ধবার্ষিক রিটার্ন দাখিল করেনি।

৪. বছর শেষে কর্মীদের অর্জিত ছুটির অর্ধেক নগদায়ন করা হয় না।

৫. কোম্পানির নিয়োগবিধি মহাপরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত নয়।

৬. ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি ও উৎসব ছুটি দেওয়া সংক্রান্ত কোনও রেকর্ড-রেজিস্টার সংরক্ষণ করা হয় না।

৭. কোম্পানির মুনাফার অংশের শতকরা ৫ ভাগ শ্রমিকের অংশগ্রহণে তহবিল গঠনসহ লভ্যাংশ বণ্টন করা হয় না।

৮. সেফটি কমিটি গঠন করা হয়নি।

৯. কর্মীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করালেও কোনও ঠিকাদারি লাইসেন্স নেয়নি।

১০. কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর থেকে লাইসেন্স নেয়নি।