প্রতিবন্ধীদের ইজিবাইক ব্যবহারে নীতিমালা প্রণয়নে সরকারকে আইনি নোটিশ

আইনি নোটিশপ্রতিবন্ধীদের মালিকানাধীন ও তাদের দ্বারা চালিত ইলেকট্রিক্যাল ভেহিকেল (ইজিবাইক ও মিশুক) ব্যবহারে নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী (পদাধিকার বলে প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও সুরক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় সমন্বয় কমিটির সভাপতি), ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সচিব (পদাধিকার বলে প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও সুরক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি), আইজিপি, ঢাকা জেলা প্রশাসক, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যানকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে মো. সোহেল রানাসহ ৩৫০ প্রতিবন্ধীর পক্ষে নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খাঁন রবিন।

আইনজীবী মো. জে আর খাঁন রবিন জানান, আমার প্রতিবন্ধী মক্কেলগণ সমাজের বোঝা না হয়ে নিজেরাই সাবলম্বী হাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্নভাবে টাকা ধার করে কিস্তির মাধ্যমে ‘ইজিবাইক ও মিশুক’ ক্রয় করে তা হতে উপার্জিত অর্থ দিয়ে একদিকে তাদের সংসার চালান, অন্যদিকে ঋণের টাকাও কিস্তির মাধ্যমে সমন্বয় করেন। ইতোমধ্যে সরকার ‘ইলেক্ট্রিক্যাল ভেহিকেল’ ঢাকা সিটি করপোরেশনে চলতে না দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় আইনশৃঙ্খলা বহিনী প্রতিনিয়ত আমার মক্কেলদের মালিকানাধীন ও তাদের দ্বারা চালিত ‘ইলেকট্রিক্যাল ভেহিকেল’ জব্দ করে ডাম্পিং-এ নিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। তাই সরকারের উক্ত সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয় হলেও আমার মক্কেলদের ক্ষেত্রে উক্ত সিদ্ধান্ত প্রতিবন্ধী আইনের ১৮(১) বিধান পরিপন্থী।

জে আর খাঁন রবিন বলেন, ‘যথযথ পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত প্রতিবন্ধীর তার কর্মে নিয়োজিত থাকার অধিকার থাকবে। কিন্ত যথাযথ কর্তৃপক্ষ আমার মক্কেলদের কোনোরকম পুনর্বাসন বা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাদের নানাভাবে হয়রানি করছেন; যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবী আরও জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে সরকার ১৯৮৪ সালের মোটর ভেহিকেল রেজুলেশন অর্ডিন্যান্স-১৯৮৪ এর ধারা ২(ই) সংশোধনক্রমে ইলেকট্রিক্যাল ভেহিকেলস এর সঙ্গা নিরুপণ করেন। উক্ত বিধান অনুযায়ী ‘ইজিবাইক ও মিশুক’ ইলেকট্রিক্যাল ভেহিকেলস এর অন্তর্ভুক্ত এবং জনসাধারণের জন্য নিরাপদ যানবাহনও বটে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উক্ত বিষয়ে কোনোরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত রয়েছে। যদিও প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসিত করার লক্ষ্যে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। সার্বিক দিক বিবেচনায় আমার প্রতিবন্ধী মক্কেলদের মালিকানাধীন ও তাদের দ্বারা চালিত ইলেকট্রিক্যাল ভেহিকেলস এর একটি নীতিমালা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন, রাস্তা ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ৩৫০ জন প্রতিবন্ধীর পক্ষে এই নোটিশ পাঠানো হলো।

‘নোটিশ প্রাপ্তির পর মক্কেলদের মালিকানাধীন ও তাদের দ্বারা চালিত ইলেকট্রিক্যাল ভেহিকেলস (ইজিবাইক ও মিশুক) যেন জব্দ করা না হয় এবং তাদেরও যেন কোনোরকম হয়রানি করা না হয় সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।’—বলেন জে আর খাঁন রবিন।

নোটিশে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবন্ধীদের মালিকানাধীন ও তাদের দ্বারা চালিত ‘ইলেকট্রিক্যাল ভেহিকেল’ নিয়ে নীতিমালা প্রণয়নসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে জানানো হয়েছে।