মামলা-মিডিয়ায় প্রচারের ভয় দেখিয়ে সব ছিনিয়ে নিতো ওরা

চক্রের কাছ থেকে উদ্ধার করা জিনিসপত্র

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মামলা ও মিডিয়া প্রচারের ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেওয়া একটি চক্রের মূলহোতা ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগেরর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন সহকারী পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মহসিন শেখ (৩০), আনিছুর রহমান (৫০), সেন্টু মুন্সি (৪০), জুয়েল মিয়া (৩০), শাহিন শেখ (২৫), মহব্বত শেখ (৩২), আবুল কালাম (৫০),  সুলতান মোল্লা (৩৪), হেমায়েত শেখ (৫৫) ও কাইয়ুম শেখ (৪৫)। তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, ডিবির জ্যাকেট, ওয়ারলেস সেট, এক জোড়া হ্যান্ডকাপ ও পুলিশ লেখা স্টিকার উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার বর্ণনায় পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ঢাকা শহরসহ পাশ্বর্বতী এলাকায় কখনও রিকশাচালক, কখনও ফেরিওয়ালা সেজে এই চক্রের সদস্যরা সাধারণ মানুষের কাছে সাহায্য চায়। তারা বলে, তাদের কাছে বেশ কিছু বিদেশি রিয়েল (মুদ্রা) আছে।
অশিক্ষিত মানুষ কীভাবে এটা ভাঙাতে হয় জানেন না। কিছু টাকার বিনিময়ে যদি ভাঙিয়ে দেন তাহলে খুব উপকার হবে বলে প্রস্তাব দেয়।

পরবর্তী সময়ে ফোনে তারা যোগাযোগ করে, জানান তার কাছে আরও অনেক রিয়েল আছে। সেগুলো সে অর্ধেক দামে বিক্রি করবে। এমন প্রলোভনে লোকটি রাজি হলে টাকা নিয়ে তাদের পছন্দমতো জায়গায় নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে আসতে বলে। এই চক্র একটি দলকে ডিবি পুলিশ সাজিয়ে ওই তারিখ ও সময়ে নির্ধারিত স্থানে পিস্তল, ওয়ারলেস সেট, হ্যান্ডকাপসহ মাইক্রোবাস বা একাধিক প্রাইভেটকারে অপেক্ষা করতে থাকে। রিকশাচালক/ফেরিওয়ালা সাজা প্রতারক কাপড়ে মুড়িয়ে রিয়েলের নামে কাগজ বা অন্য কোনও জিনিস নিয়ে এসে রিয়েল ক্রেতাকে (ভুক্তভোগী) দেয়। তারপর টাকা হাতে নিয়ে বলে, পুলিশ আসছে তাড়াতাড়ি চলে যান। একথা বলে রিয়েল বিক্রেতা (প্রতারক চক্র) টাকা নিয়ে সটকে পড়ে। রিয়েল ক্রেতা (ভুক্তভোগী) সামনে হাঁটা শুরু করতেই ভুয়া ডিবি দলের সদস্যরা রিয়েল ক্রেতাকে (ভুক্তভোগী) আটক করে তাদের গাড়িতে উঠিয়ে নেয়।

তার কাছে অবৈধ রিয়েল আছে, তার বিরুদ্ধে মামলা/মিডিয়ায় প্রচার করার ভয় দেখিয়ে তার কাছে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ফোন বা অন্যান্য মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেয়। ভুক্তভোগীর কাছে এটিএম কার্ড থাকলে বুথ থেকে টাকা তুলে নেয় ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফার করে নেয়। পরে তাকে সুবিধাজনক স্থানে নামিয়ে দিয়ে অপরাধীরা চলে যায়।

গোয়েন্দা এই কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ঢাকা শহর ছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ঢাকা মহানগর এবং পার্শ্ববতী এলাকায় এই ধরনের অনেকগুলি অপরাধীদের দল আছে। অপরাধী চক্রের পলাতক ও অন্যান্য সদস্যদেরকে গ্রেফতারে অভিযান চলমান আছে।