আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলা আপিল বিভাগের কার্যতালিকা থেকে বাদ!

মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে খালাস প্রাপ্তদের বিরুদ্ধে এবং এক আসামির সাজা বৃদ্ধি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদন আপাতত কার্যতালিকা (কজলিস্ট) থেকে বাদ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ। আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি হাইকোর্টে থাকাকালে এই মামলার বিচারক ছিলেন। আপিলের আরেক বিচারপতি হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে ছিলেন। যেহেতু তারা এখন আপিল বিভাগের বিচারপতি। তাই আইনগতভাবে তারা মামলাটি শুনতে পারবেন না বিধায় আপিল বিভাগ মামলাটি আপাতত কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন। পরবর্তীতে বেঞ্চ গঠনের মাধ্যমে মামলাটির শুনানি হবে।’

২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় আহসানউল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পরদিন আহসান উল্লাহ মাস্টারের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দশ-বারো জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এরপর বিচার শেষে ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল বিচারিক আদালত নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ এবং দুই জনকে খালাস দেন।

পরে বিচারিক আদালতের রায়ের বিষয়ে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল হয়। এরপর ২০১৬ সালের ১৫ জুন হাইকোর্টের রায় ঘোষণা করা হয়। মামলার রায়ে ছয় জনের ফাঁসি বহাল থাকে। এই মামলায় ৩০ আসামির মধ্যে নিম্ন আদালতে মোট ২৮ জনের দণ্ড হয়। এর মধ্যে ২২ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। এসব আসামিদের মধ্যে ১৭ জন কারাগারে এবং ৯ জন পলাতক রয়েছেন। এ ছাড়া দুই জন মারা গেছেন।

এদিকে আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে খালাসপ্রাপ্ত ১১ জনের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। খালাস পাওয়া ১১ আসামি হলেন: আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, ফয়সাল (পলাতক), লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির (পলাতক), খোকন (পলাতক), দুলাল মিয়া, রাকিব উদ্দিন সরকার ওরফে পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর (পিতা মেহের আলী) ও মনির। ১১ জনের মধ্যে তিন আসামি পালাতক রয়েছেন যারা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত। এরপর হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে খালাসপ্রাপ্তদের সাজা এবং এক আসামির সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।