স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কারা অধিদফতরের ডিজিকে আদালত অবমাননার নোটিশ

আদালতের আদেশ অমান্য করাসহ অসত্য তথ্য সরবরাহ করায় স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কারা অধিদফতরের ডিজিকে (মহাপরিচালক) আদালত অবমাননার নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে। রবিবার (৭ মার্চ) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জেআর খান (রবিন) এ নোটিশ প্রেরণ করেন।

নোটিশে বলা হয়েছে, দেশের ৬৮টি কারাগারে ৪০ হাজার ৬৬৪ কারাবন্দী ধারন ক্ষমতা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে এর চেয়ে ২-৩ গুণ বেশি বন্দী কারগারে অবস্থান করেন। অন্যদিকে, ১৪১টি পদের বিপরীতে করা ডাক্তার ছিলেন মাত্র ৯ জন। এতে করে বন্দীদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনজীবী মো. জেআর খান (রবিন) জনস্বার্থে একটি রিট দায়েরে করেন। ওই রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৩ জুন বিচারপতি এএফএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। রুলে কারাবন্দীদের বাসস্থান ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চান এবং কারা কর্তৃপক্ষকে সার্বিক বিষয়ে আাদালতকে অবহিত করার নির্দেশ প্রদান করেন। অতঃপর কারা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন তারিখে হলফনামার মাধ্যমে দেশের সব কারাগারে ২৪ জন ডাক্তার থাকার বিষয়ে নিশ্চিত করেন। সঙ্গে সঙ্গে খালি ১১৭টি পদে ডাক্তার নিয়োগের ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় আদেশ প্রার্থনা করেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি হাইকোর্ট অনতিবিলম্বে শূন্য পদে ১১৭ জন ডাক্তার নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজিকে নির্দেশ প্রদান করেন।

এরপর এ বছরের ১৭ জানুয়ারি কারা কর্তৃপক্ষ হলফের মাধ্যমে আদালতকে জানায় যে, ‘১৪১ পদের বিপরীতে ১২২ জন ডাক্তার দেশের বিভিন্ন কারাগারে নিয়োজিত আছেন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৮ জন, রংপুর বিভাগে ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৭ জন, সিলেট বিভাগে ১৭ জন, খুলনা বিভাগে ১৬ জন এবং বরিশাল বিভাগে ১০ জন আছেন। ১২২ জনের মধ্যে ৭ জন ডিপোটেশনে এবং ১০৫ জন পর্যায়ক্রমে সংযুক্ত আছেন।

আইনজীবী মো. জেআর খান (রবিন) বলেন, ‘একই বিষয়ে গত ৪ মার্চ দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এখনও কারাগারে ১৩৪টি ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে। সেহেতু স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি আদালতের আদেশ অনুসারে কারাগারে ডাক্তার নিয়োগ না দেওয়ায় আদালত আদেশ অমান্য করেছেন। একইসঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষ ডাক্তার নিয়োগের বিষয়ে সঠিক তথ্য সরবরাহ না করায় তাদের কাজও আদালত অবমানের শামিল। তাই তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।’

নোটিশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক কারাগারে অন্তবর্তীকালীন ১১৭টি শূন্য পদে ডাক্তার নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হবে বলেও নোটিশে জানানো হয়েছে।