মিতুর জন্য বাবুল আক্তারের সেই কান্না

পাঁচ বছর আগে চট্টগ্রামে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের ‘সম্পৃক্ততার প্রমাণ’ পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  ছড়িয়ে পড়ে বাবুল আক্তারের সেই কান্নায় ভেঙে পড়া ছবি। যেখানে দেখা যাচ্ছে জানাজার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবুল আক্তার। আর তাকে তার সহকর্মীরা ধরে রেখেছেন।

অপরাধবিজ্ঞানীরা বলছেন, এখনও চূড়ান্ত মন্তব্য করার সময় আসেনি।  যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে তার মানসিক দৃঢ়তা অত্যন্ত বেশি বলতে হবে। নাহলে স্ত্রীর লাশের সামনে এমন কান্নার ‘অভিনয়’ করা সম্ভব নয়।

হত্যাকাণ্ডের পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে বাবুলকে নিয়ে সন্দেহের কথা বলতে শুরু করেন তার শ্বশুর মোশাররফ। তিনি বলেছিলেন, ‘এখন যেসব শুনছি, তার কিছুটাও যদি সত্য হয় তাহলে তো বুঝবো, স্ত্রী মারা যাওয়ার পর বাবুল আমার বাসায় থেকে অভিনয় করেছে।’

২০১৭ সালে বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ‘বাবুলকে সন্দেহ করার অনেক কারণ রয়েছে। ঘটনার পর থেকেই সে কোনও কথা স্পষ্ট করে বলছে না। এমনকি গোয়েন্দা কার্যালয়ে তাকে নিয়ে যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, কী নিয়ে কথা হয়েছে, তারও কিছুই জানায়নি সে। চাকরি থেকে তাকে জোরপূর্বক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, নাকি পদত্যাগপত্র লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাও কোনও দিন শেয়ার করেনি। চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য কোনও আবেদনও করেনি। সবসময় তার মধ্যে কিছু তথ্য আড়াল করার প্রবণতা দেখা গেছে। যদি সে জড়িত না হয়, তাহলে সে এমন আচরণ করবে কেন?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. জিয়া রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে বলতে হয়, তার মানসিক শক্তি অসম্ভব বেশি। নাহলে যে হত্যাকাণ্ডে তিনি জড়িত সেখানে এধরনের ‘অভিনয়’ সম্ভব না। বলতেই হয় হিউম্যান সাইকোলজি অত্যন্ত জটিল। বাবুল আক্তার যেহেতু এখনও দোষী সাব্যস্ত হননি তাই যেকোনও কথা বলার ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক থাকা দরকার।