শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: ৭ আসামির জামিন স্থগিত

২০০২ সালে সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা করেছিল দুর্বৃত্তরা। সেই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১৮ আসামির মধ্যে ৭ জনের জামিন স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত এই আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। অপরদিকে আসামিপক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

এর আগে এই মামলায় নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ১৮ আসামির মধ্যে ৭ জনকে জামিন দেন হাইকোর্ট। জামিনপ্রাপ্তরা হলেন— সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, গোলাস রসুল, আব্দুস সামাদ, জহিরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম। গত ২৫ মে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে মামলার অপর ১১ আসামির জামিনের আদেশের জন্য আগামী রবিবার (৩০ মে) দিন ধার্য করেন আদালত।

প্রসঙ্গত, এর আগে ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেদিন সড়কযোগে ঢাকায় ফেরার পথে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এমনকি বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পরে একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া থানার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

পরে ২০১৫ সালে এ ঘটনায় আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। এরপর মামলার শুনানি শেষে গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় দেন সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীর।

আদালতের রায়ে সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, বিএনপি নেতা আরিফুর রহমান ও রিপনকে ১০ বছরের, কলারোয়া উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের বাচ্চুকে ৯ বছরের এবং বাকি ৪৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রায় ঘোষণার সময় ৩৪ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন— সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, বিএনপি নেতা আশরাফ হোসেন, নজরুল ইসলাম, মো. আব্দুর রাজ্জাক, শেখ তামিম আজাদ মেরিন, মো. আব্দুর রকিব মোল্ল্যা, মো. আক্তারুল ইসলাম, মো. আব্দুল মজিদ, মো. হাসান আলী, ময়না, মো. আব্দুস সাত্তার, তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, মো. জহুরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সামাদ, মো. আলতাফ হোসেন, শাহাবুদ্দিন, মো. সাহেব আলী, সিরাজুল ইসলাম, রকিব, ট্রলি শহীদুল, মো. মনিরুল ইসলাম, শেখ কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলী, শেলী, শাহিনুর রহমান, দিদার মোড়ল, সোহাগ হোসেন, মাহাফুজুর মোল্লা, আব্দুল গফফার গাজী, রিংকু, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সামাদ ও টাইগার খোকন।

তবে এই মামলার বাকি ১৬ আসামি— আব্দুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম, মো. আলাউদ্দিন, খালেদ মঞ্জুর রোমেল, আরিফুর রহমান, রিপন, ইয়াছিন আলী, রবিউল ইসলাম, মাজাহারুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, আব্দুর রব, সঞ্জু, নাজমুল হোসেন, জাবিদ রায়হান লাকী, কনক ও মো. মাহাফুজুর রহমান বর্তমানে পলাতক।