বান্ধবীকে নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ, গ্রেফতার ৪

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। বুধবার (২৬ মে) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করে সিআইডি। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, শামীম আহমেদ ওরফে মোস্তফা মনির ওরফে মোশাররফ, তানজিলা সুলতানা সমাপ্তি, বজলুর রশিদ ও শরিফুল ইসলাম। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিমানের ড্রেসকোড, মোবাইল ও ভুয়া নিয়োগপত্র।

অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে বিমান বাংলাদেশ কর্মকর্তাদের যোগসাজশের আভাস পাওয়া গেছে। আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি। এছাড়া গ্রেফতারকৃত শামীম সিআইডির কাছে তথ্য দিয়েছে, বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। তিনি এর আগে বিমানের কেবিন ক্রু, এক্সিকিউটিভ অফিসার, সিগন্যালম্যান, চেকিং অফিসার, এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার পদে অনেককে চাকরি দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিমানের একটি বিভাগের সহকারী পরিচালক পদে চাকরির জন্য শামীমকে ২০১৯ সালে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা দেয় এক ব্যক্তি। তারপর প্রতারিত হয়ে এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। সে মামলা তদন্ত করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার ঘটনা জানতে পায় সিআইডি। রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এই প্রতারক চক্রের বিভিন্ন প্রতারণার বিষয় তদন্তে উঠে আসে সিআইডির কাছে। গ্রেফতারকৃত শামীম (৪৫) কখনও মোস্তফা মনির কখনও মোশাররফ হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিজেকে দাবি করতেন। টাকা দিয়ে বিমানের চাকরি দিতে পারেন বলেও লোকজনদের কাছে পরিচয় দিতেন। এদিকে তার বান্ধবী তানজিনা সুলতানা সমাপ্তি নিজেকে পরিচয় দিতেন বিমানের এয়ার হোস্টেস বা কেবিন ক্রু হিসেবে। চার জন মিলে বিমানের চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করতেন তারা। এরমধ্যে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। কী পরিমাণ অর্থ তারা হাতিয়ে নিয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য সিআইডির কাছে রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এ চাকরি দেওয়ার নাম করে একেকজনের কাছে থেকে ১৩ থেকে ১৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। একসময় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হিসেবে বিমানবন্দরে কাজ শুরু করেন শামীম আহমেদ। সেখান থেকেই অনেকের সঙ্গে পরিচয়। পরে প্রতারণার কৌশল জেনে চাকরি ছেড়ে দিয়ে এই কাজ শুরু করেন। এছাড়া প্রতারক চক্রের আরেক সদস্য বজলুর রশিদ সেনাবাহিনীর সৈনিক হিসেবে র‌্যাবের সদস্য ছিলেন। ২০০৭ সালে একটি ডাকাতি মামলায় তাকে চাকরিচ্যুত করে জেলে পাঠানো হয়। আট বছর জেল খেটে তিনি বের হয়ে প্রতারক চক্রের সঙ্গে যোগ দেন। বজলুর রশিদ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কথিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বডিগার্ড হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে পরিচয় দিতো বলে জানায় সিআইডি।