নারী ও শিশু ধর্ষণ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আহ্বান প্রধান বিচারপতির

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নির্যাতন সংশ্লিষ্ট বিচার দ্রুত ও সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে। শনিবার (১৯ জুন) জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণ রোধে করণীয়’ নির্ধারণ বিষয়ক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এই ভার্চুয়াল সভায় ৬৪ জেলার জেলা ও দায়রা জজ, সকল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটগণসহ ২৪৯ জন বিচারক অংশগ্রহণ করেন।

বিচারকদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ। ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর সাক্ষ্য বিশ্বাসযোগ্য হলেই ধর্ষককে শাস্তি দেওয়া যায়। এসকল মামলার দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আমি আশা করব, ধর্ষণের মামলা পরিচালনাকালে কারও দ্বারা আদালত প্রভাবিত হবে না। বিচারহীনতা, বিচারে বিলম্বের অভিযোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। রায় প্রদানে কালক্ষেপণ করা কখনই কাম্য নয়। প্রয়োজনে ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে সাজা না পায় আর অপরাধী যাতে নিস্তার না পায়।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, ধর্ষণের মামলার শাস্তি দ্রুত কার্যকর করা জরুরি। আমরা নুসরাত ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দ্রুত রায় দেখেছি যা প্রশংসনীয়। কিন্তু রায় এখনও কার্যকর হয়নি। সকল ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলার দ্রুত রায় এবং রায় কার্যকর হলে এধরণের জঘন্য অপরাধ কমে আসবে।

সভায় কমিটির আহ্বায়ক জেসমিন আরা বেগম স্বাগত বক্তব্যে কমিটির কার্যক্রম এবং বিচারকদের কাছে তার প্রত্যাশার বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন। বিজ্ঞ বিচারকগণ নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নির্যাতন কমিয়ে আনার লক্ষ্যে করণীয় সম্পর্কে তাদের মতামত এবং এসকল মামলার বিচারকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন।

উল্লেখ্য, দেশে প্রথমবারের মত কমিশনের সদস্য সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগমকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট ন্যাশনাল ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করেছে কমিশন। কমিটি ইনকোয়ারি শেষে কমিশনের সঙ্গে যৌথভাবে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন ও সরকারকে সুপারিশ প্রদান করবে।