ভয়ংকর এলএসডি ও ডিএমটিসহ গ্রেফতার ৪ শিক্ষার্থী রিমান্ডে

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকা থেকে ভয়ংকর মাদক এলএসডি ও ডিএমটিসহ গ্রেফতারকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২৮ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিনূর রহমানের অদালত তাদের রিমান্ডের আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আসামিদের মধ্যে সৈয়দ মঈন উদ্দিন আহমেদ ওরফে শাদাব ও স্বপ্নীল হোসেনের দুই দিনের রিমান্ড এবং আসামি আব্রাহাম জোনায়েদ তাহের ও সিমিয়ন খন্দকারের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ৫ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। অপরদিকে আসামিদের পক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহামেদ তালুকদার,শ্রী প্রাণ নাথসহ আরও কয়েকজন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে শনিবার (২৬ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন লাভ রোড থেকে তাদের চার জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব।

এসময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ৪০টি এলএসডি ব্লট, ৬০০ গ্রাম ডিএমটি ও ৬২ গ্রাম আমেরিকান ক্যানাবিজ উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব জানায়,  এলএসডি (লাইসার্জিক এসিড ডায়াথ্যালামাইড) ও ডিএমটি (ডায়ামিথাইল ট্রিপট্যামাইন) জিহ্বার স্বাদে, ধোঁয়া বা ইনজেকশনের মাধ্যমে নেওয়া হয়। এটি সেবনের পর এক ধরনের হ্যালুসিনেশন তৈরি হয়, যা থেকে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।

র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক খন্দকার সাইফুল আলম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-২ এর একটি দল ও সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় অভিযান চালায়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুই জন বিদেশে অবস্থানকালীন এসব মাদক সেবনে আসক্ত হয়ে পড়েন।

এদের মধ্যে মঈন উদ্দিন আহমেদ রাজধানীর উত্তরার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ও লেভেল শেষ করে ভারতের দার্জিলিং থেকে এ লেভেল সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি ২০১৫ সালে ব্যাংককের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়তে যান। সেখানে গিয়েই তিনি এলএসডি ও ডিএমটি সেবনে আসক্ত হন। দেশে এসেও তিসি বিভিন্ন পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে এলএসডি ও ডিএমটি মাদক এনে বন্ধুদের সঙ্গে সেবন করতেন।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃত আব্রাহাম জোনায়েদ তাহের রাজধানীর একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে ও লেভেল শেষ করে মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে ২০১৫-১৬ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে যান। সেখান থেকে এমবিএ শেষ করে ২০২০ সালে দেশে ফিরে আসেন। জোনায়েদও যুক্তরাজ্যে পড়ার সময় এলএসডি ও ডিএমটি সেবনে আসক্ত হন। দেশে ফিরেও আসক্তির কারণে বিদেশ থেকে অনলাইনে অর্ডার দিয়ে এসব মাদক এনে সেবন ও বিক্রি করতেন তারা।

র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃত বাকি দুই তরুণ স্বপ্নীল ও সিমিয়ন খন্দকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এই চার জন একই চক্রের মাধ্যমে বিদেশ থেকে এলএসডি ও ডিএমটি মাদক এনে নিজেরা সেবন করার পাশাপাশি বিক্রি করতেন।