ঈদ উপলক্ষে মুক্তি পাচ্ছেন ১১ কারাবন্দি

ঈদুল আজহা উপলক্ষে সাধারণ ক্ষমায় দেশের কারাগারগুলো থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১১ জন বন্দি। ওই বন্দিদের সাজার মেয়াদ ছিল শেষ পর্যায়ে এবং তারা ছিলেন বয়োবৃদ্ধ।

ঈদের দিন কারাগারে বন্দিদের মধ্যে গরু, খাসি ও মুরগির রোস্ট ছাড়াও অন্যান্য উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে বলে কারা সূত্র জানায়।

সংশ্লিষ্ট কারা কর্মকর্তারা জানান, ঈদ, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসকে সামনে রেখে সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পেয়ে থাকেন লঘু অপরাধে দণ্ডিত কারাবন্দিরা। কারাবিধি অনুযায়ী সাতটি শর্ত পূরণ করার পর যাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটি সুপারিশ করবে, শুধু সেই বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়ে থাকে। যাবজ্জীবন ছাড়া অন্য যেকোনও মামলায় সাজার মেয়াদের অর্ধেক সময় যাদের অতিবাহিত হয়ে গেছে, শুধু তাদের ক্ষেত্রে সুপারিশ করা হয়ে থাকে। অচল, অক্ষম, দৃষ্টিশক্তি নষ্ট বা প্রায় অকেজো হয়ে গেছে, দুরারোগ্য মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছে এমন যে কোনও এমন বন্দি মুক্তির জন্য সুপারিশযোগ্য।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, ঈদসহ বিশেষ দিনগুলোতে বন্দিদের সাধারণ ক্ষমায় মুক্তির জন্য প্রতিটি জেলায় একটি করে কমিটি আছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা প্রশাসক এ কমিটির প্রধান থাকেন। প্রতিবছরই এ কমিটি সংশ্লিষ্ট কারাগারের বন্দিদের বিভিন্ন মামলা যাচাই-বাছাই করেন। পরে সেগুলো পাঠানো হয় কারা অধিদফতরে। এরপর কারা অধিদফতর থেকে একটি খসড়া তালিকা পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয়ের কারা বিভাগ এগুলো যাচাই-বাছাই করে যে ক’জনের মুক্তির নির্দেশনা দেন, কেবল তাদেরই মুক্তি দেওয়া হয়।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহাবুবুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, করোনার কারণে সারাদেশে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সরাসরি দেখা-সাক্ষাৎ আগে থেকেই বন্ধ আছে। একই কারণে এবারও ঈদ উপলক্ষে স্বজনদের সঙ্গে বন্দিদের সরাসরি সাক্ষাৎ বন্ধ থাকবে। টেলিফোনে বন্দিরা স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। তাছাড়া প্রতিবছর স্বজনদের কাছ থেকে বন্দিদের জন্য যে খাবার পাঠানো হয়, সেটা দেওয়াও বন্ধ থাকবে। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির বিষয়ে চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঈদের দিন কারাগারের পক্ষ থেকে উন্নত খাবার দেওয়া হয়। সেজন্য ঈদের দিন স্বজনদের পক্ষ থেকে খাবার না দিলেও চলবে।

তিনি জানান, ঈদের দিন সকালে বন্দিদের মধ্যে মুড়ি ও পায়েশ দেওয়া হবে। দুপুরে পোলাও, গরু, খাসি ও মুরগির রোস্ট ও কোল্ড ড্রিংস দেওয়া হবে।রাতে ভাত, মাছ, আলুর দম, মিষ্টি ও পান-সুপারি দেওয়া হবে।

কারা অধিদফতরের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কিছুদিন আগে কারা অধিদফতর থেকে একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে তারা ১১ জনের মুক্তির নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই ১১ জনকে ইতোমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।