পরীমণি তার আইনজীবীদের ওপর ক্ষেপে গেছেন: রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী

‘জামিন আবেদন না করায় পরীমণি তার আইনজীবীদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন। সেটা আমরা সবাই দেখেছে। যেহেতু পরীমণির আইনজীবীদের পক্ষ থেকে কোনও জামিন আবেদন করা হয়নি। সেহেতু আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’ 

শনিবার (২১ আগস্ট) রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির হওয়ার পরে জামিন আবেদন না থাকায় আদালত পরীমণিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লা শুনানি শেষে বেরিয়ে এসে এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, মাদক মামলায় রিমান্ড শেষে আজ আসামি পরীমণিকে আদালতে হাজির করা হয়। তার পুনরায় রিমান্ডের কোনও আবেদন ছিল না। আসামিপক্ষের জামিনের আবেদনও ছিল না। তাদের পক্ষ থেকে আদালতে পরীমণির সঙ্গে সাক্ষাতের একটি আবেদন করা হয়েছিল। আমরা সেই আবেদনের বিরোধিতা করেছি। 

তিনি আরও বলেন, যেহেতু মামলা তদন্ত পর্যায়ে, সেটা এখন আদালতে সাক্ষাতের কোনও সুযোগ নেই। মামলাটি ট্রায়ালে গেলে তখন কথা বলতে পারবে। এমনকি রিমান্ড আবেদন না থাকলে আসামিকে আদালতে আনারও প্রয়োজন থাকে না। পরীমণির আইনজীবীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। আমরা তারও বিরোধিতা করে বলেছি, এখন পর্যন্ত নিয়ম মেনে সবই করা হচ্ছে। তারা এমন দাবি করতে পারেন না।

এর আগে পরীমণিকে বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তৃতীয় দফায় রিমান্ড শেষে আদালতে তোলা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালত পরীমণিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা পরীমণিকে তৃতীয় দফায় একদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেন। এরপর তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। 

তদন্ত কর্মকর্তা কারাগারে আটক রাখার আবেদনে বলেন, আসামি পরীমণি মামলার বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন। তার দেওয়া তথ্য-উপাত্ত তদন্তের স্বার্থে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। মামলার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করছি। তাকে জামিন দিলে মুক্তি পেলে তিনি বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারেন ও পালাতে পারেন।

অন্যদিকে অ্যাডভোকেট কামরুজ জামান চৌধুরী ও নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভীসহ আসামিপক্ষের অন্য আইনজীবীরা আদালতে পরীমণির সঙ্গে কথা বলার জন্য আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন নামঞ্জুর করে পরীমণিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে আজ সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে পরীমণিকে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাকে আদালতের হাজতখানায় তাকে রাখা হয়। পরে বিকাল পৌনে ৩টায় তাকে এজলাসে হাজির করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালত পরীমণির একদিন, ১০ আগস্ট ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত দুই দিন এবং গত ৫ আগস্ট একই মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ পরীমণির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তিন দফায় মোট পরীমণিকে সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত,  গত ৪ আগস্ট রাতে প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান চালিয়ে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগীকে আটক করে র‍্যাব। তার বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয় বলে জানানো হয়। আটকের পর তাদের নেওয়া হয় র‍্যাব সদর দফতরে। পরে র‍্যাব-১ বাদী হয়ে মাদক আইনে পরীমণির বিরুদ্ধে মামলা করে।