মেট্রোরেলের গাড়ি ভাঙচুর: ছাত্রদলের সেই নেতা গ্রেফতার

রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় মেট্র্রোরেল প্রকল্পের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে চিহ্নিত যুবক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রুমীকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সেই সঙ্গে এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

সোমবার (২৩ আগস্ট) রাতে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহাদাত হোসেন সুমা এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, চন্দ্রিমা উদ্যানের আশপাশে ভাঙচুরের ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুরের সময়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। সেই ছবি ধরে অনুসন্ধান করতে গিয়ে রুমী ও জুয়েলকে যাত্রাবাড়ীর কাজলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। 

গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতদের শেরেবাংলা নগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের তারা আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। ভাঙচুরের ঘটনায় আরও যারা জড়িত ছিলেন তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৮ আগস্ট চন্দ্রিমা উদ্যানে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় মেট্রোরেল প্রকল্পের গাড়িসহ যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করেন। ওই ঘটনায় মেট্রোরেল প্রকল্পের অ্যাডমিন অ্যান্ড সিকিউরিটি অফিসার আব্দুস সালাম বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, অজ্ঞাত আসামিরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দিতে মেট্রোরেল প্রকল্পের একটি সিঙ্গেল কেবিন পিকাপ (পিইউ ৫১-৯০২০), ৩০টি ফ্রগ লিফট, দুটি এফএল, একটি হাইবেড ট্রেইলার উইথ প্রাইম মোভার, দুটি করোলা ক্রেনগাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় পিকাপ গাড়ির চালক রাসেল আহত হন।

এছাড়া পৃথক আরেক মামলায় অভিযোগ করা হয়, আব্দুস সালাম ফকির নামে মেট্রোরেল প্রকল্পের আরেকজন সিকিউরিটি সুপারভাইজার ও প্রকল্পের জাপানিজ কর্মকর্তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-গ- ৩৭-০৪৩৮) ভাঙচুর করা হয়েছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, মেট্রোরেল প্রকল্পের গাড়ি ও যন্ত্রপাতি ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কারণে বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কিছু ছবি সংগ্রহ করে। সেসব ছবিতে কালো নীল জিন্স ও ছাই রঙের গেঞ্জি পরা এক যুবককে ভাঙচুরে নেতৃত্ব দিতে দেখতে পায়। সেই ছবির সূত্র ধরে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তার পরিচয় শনাক্ত করে।

গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ভাঙচুরে নেতৃত্ব দেওয়া সেই যুবক হলো মোস্তাফিজুর রহমান রুমী। তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকিতে। কেরানীগঞ্জের ইস্পাহানী এলাকার বাসিন্দা রুমী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব প্রার্থী। এছাড়া ভাঙচুরের ঘটনায় রুমীকে নির্দেশদানকারী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েলকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।