ই-কমার্সের পলাতকদের ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া অব্যাহত থাকবে: সিআইডি

ই-অরেঞ্জ, রিং আইডিসহ বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের পলাতক ব্যবসায়ীদের বিদেশ থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। ইতোমধ্যে ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানাকে ফিরিয়ে আনতে পুলিশ সদর দফতর তিন দফা ইন্টারপোলের মাধ্যমে ভারতকে চিঠি দিয়েছে। তবে ভারত এখনও কোনও সাড়া দেয়নি।

সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে ই-কমার্সের নামে অর্থআত্মসাৎকারী পলাতক ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি আলোচনায় আসে। সাংবাদিকরা ই-কমার্স কেলেঙ্কারির ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সিআইডির কর্মকর্তাদের কাছে বিদেশে পলাতকদের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানতে চান। জবাবে সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক কামরুল আহসান বলেন, ‘আমরা রিং আইডির মালিক কানাডা প্রবাসী শরিফ ইসলাম ও আইরিন ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা নেবো।’

তিনি বলেন, ‘মামলা হয়েছে, রিংআইডির কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এসব প্রতিষ্ঠানের অর্থ লেনদেনের বিষয়টি এখনও তদন্ত করছি। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে প্রায় ২ শ কোটি টাকা জব্দ করেছে। তাদের বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে।’

এদিকে, ইন্টারপোলের সহযোগিতায় তাদের ফেরত চেয়ে চিঠি দিলেও বিতর্কিত ই-কমার্স প্লাটফর্ম ই-অরেঞ্চের পৃষ্ঠপোষক ও বনানী থানার পরিদর্শক (বরখাস্ত) সোহেল রানাকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে এখনও সাড়া দেয়নি ভারত।

ইন্টারপোলের সহযোগিতায় সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) তিন দফায় চিঠি দিয়েছিল ভারতকে। ভারতের কাছ থেকে এখনও কোন সাড়া মেলেনি।

পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, "আমরা চিঠি দিয়েছি, প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছে। তবে সেই চিঠির জবাব ভারত থেকে এখনও আসেনি। তবে চিঠির জবাব দেওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তারপরও আমরা আরেকবার রিমেইন্ডার দিবো।"

তবে সোহেলের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা ডিএমপি এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেও চেষ্টা করতে পারে বলেও তিনি মনে করেন।

গত ২৪ আগস্ট ১৬ জন গ্রাহকের পক্ষে মো. রাসেল নামে এক ব্যক্তি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৮৮ লাখ ৯৪ হাজার ৯১৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়। শেখ সোহেল রানা ছাড়াও ওই মামলায় সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, নাজনীন নাহার বিথি, আমান উল্লাহ, কাওসার, কামরুল হাসান, আব্দুল কাদের, নুরজাহান ইসলাম সোনিয়া ও রুবেল খানকে আসামি করা হয়। মুখ্য মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভুঁইয়া গুলশান থানা পুলিশকে মামলাটি রেকর্ড করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন।

এরপর ২ সেপ্টেম্বর আরও একটি মামলা হয়। এই মামলাতে সোহেল রানাকে আসামি করা হয়। এর পরপরই আত্মগোপনে চলে যায় সোহেল রানা।

৩ সেপ্টেম্বর ভোরে ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে তাকে বিএসএফ গ্রেফতার করে। বর্তমানে ভারতে পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে সোহেল রানা।