স্ত্রীসহ স্বাস্থ্যের সাবেক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা

স্ত্রীসহ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সাবেক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তারা হলেন নজরুল ইসলাম (৬০) ও তার স্ত্রী সৈয়দা তামান্না শাহেরীন (৬৩)। এছাড়া তাদের সঙ্গে তামান্নার ভাই সৈয়দ হাসান শিবলীকে একই মামলায় আসামি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুদকের উপ-পরিচালক আশীষ কুমার কুণ্ডু বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশে মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৬ কোটি ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৭৬৩ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, দুদকের অনুসন্ধানে সাবেক প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের স্থাবর সম্পদ হিসাবে নিজ নামীয় দলিলে পল্লবী এলাকায় জমি এবং উত্তরা দিয়াবাড়ি এলাকায় তিন কাঠার একটি জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া ঝিনাইদহে হেবামূলে প্রায় তিন শতাংশ জমিসহ তার প্রায় ৩০ লাখ টাকার মোট স্থাবর সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া অস্থাবর সম্পত্তি হিসাবে ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা ও যমুনা ব্যাংকে ১৫টি ব্যাংক হিসাবে জামানত হিসাবে মোট ৮ কোটি টাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

দুদক কর্মকর্তারা জানান, সাবেক প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে যোগ দেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তার অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে সরকারি চাকরির আগে সঞ্চয় ও চাকরি জীবনের সঞ্চয় ও অন্যান্য আয় হিসাবে ২ কোটি ৩৮ লাখ ১৩ হাজার ৯৩৭ টাকা গ্রহণযোগ্য বিবেচনা করা হয়েছে। ২০১০-১১ করবর্ষে নজরুল ইসলাম তার স্ত্রী তামান্না শাহেরীনের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা এবং ২০১৯-২০ করবর্ষে ৪ কোটি টাকাসহ ৬ কোটি টাকা দান হিসাবে গ্রহণ করার কোনও গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

সূত্র জানায়, অনুসন্ধানে দুদক কর্মকর্তারা জানতে পারেন প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের স্ত্রী সৈয়দা তামান্না শাহেরীন একজন গৃহিনী। তিনি আয়ের উৎস হিসেবে খামার ও মৎস্য চাষের কথা উল্লেখ করলেও এ বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। সুতরাং তার পক্ষে স্বামী নজরুল ইসলামকে ৬ কোটি টাকা দানের বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হিসেবে প্রতীয়মান হয়নি। এসব অর্থ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করে এবং অবৈধ উৎস গোপন করার লক্ষ্যে নগদ এফডিআর করে মানি লন্ডারিং করা হয়েছে বলে দুদক মনে করছে।

দুদক কর্মকর্তার জানান, প্রকৌশলী সৈয়দা তামান্না শাহেরীনের নিজের নামে ঢাকার ধানমন্ডি ১৫ নম্বর সড়কের ১৭ নম্বর ভবনে একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া তার নামে নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকায় ২ কাঠা ৮ ছটাক আয়তনের একটি প্লট পাওয়া গেছে। তার কোনও বৈধ আয় না থাকায় স্বামীর অবৈধ অর্থে নিজের নামে সম্পত্তি ক্রয় করে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এজন্য তাকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।