চোরাই গাড়ির বিনিময়ে টাকা দাবি, বনিবনা না হলে ধোলাইখালে

সিএনজি, অটোরিকশা, পিকআপ, মোটরসাইকেল ছিনতাই করার পর সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মালিককে ফোন করা হয়। দাবি করা হয় নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা। চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে না পারলে চোরাই গাড়ির পার্টস খুলে বিক্রি করা হয় ধোলাইখালসহ বিভিন্ন জায়গায়। বনিবনা হলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হয় লেনদেন। আবার অনেক সময় ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে গাড়িগুলো বিক্রি হয় গ্রামাঞ্চলে।

সম্প্রতি রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়ে গাড়ি ছিনতাইকারী চক্রের কয়েকজনকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানতে পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ছিনতাইকারী চক্রটি কয়েক ধাপে গাড়ি ছিনতাই করে। চক্রের সদস্যরা আগে রেকি করে—কোথায় গাড়ি পার্কিং বেশি হয়, কোথায় সিসিটিভি নেই। এসব তথ্য পর্যালোচনা করে তারা একটি জরিপ চালায়।

আরেকটি গ্রুপ ছিনতাই হওয়া গাড়ির দ্রুত রঙ পরিবর্তনের কাজ করে। অন্য একটি গ্রুপ গাড়ির মালিককে ফোন দেয় গাড়ি ফেরত নেওয়ার জন্য। টাকায় বনিবনা হলে মালিক গাড়ি ফেরত পায়। না হলে খুচরা যন্ত্রাংশ বিভিন্ন দোকানে চলে যায়। আরেকটি গ্রুপ গাড়ির ভুয়া কাগজ তৈরি করে। এ ছাড়া ওরা ছিনতাই হওয়া গাড়ির মালিকের ফোন নম্বর ও তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহও করে।

র‌্যাব জানায়, ছিনতাই করার পর চক্রটির সঙ্গে মালিকের বনিবনা হলে তাকে একটি লোকেশন জানিয়ে বলা হয় গাড়িটি সেখানে রাখা আছে। চক্রের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাবগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

র‌্যাব আরও বলছে, চক্রের সদস্যদের মূলত ঢাকার আশপাশে সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, টঙ্গী এবং কেরানীগঞ্জ এলাকায় তৎপরতা বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। এ ছাড়া রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকাতেও গাড়ি ছিনতাইকারীরা তৎপর। সিএনজি, অটোরিকশা, পিকআপ কিংবা মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে সেগুলোর রেজিস্ট্রেশন যথাযথ কিনা তা অবশ্যই গ্রাহককে যাচাই করতে হবে। চোরাই গাড়ি কিনলে তিনিও আইনের হাত থেকে রেহাই পাবেন না।

র‌্যাব-৪ অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোজাম্মেল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিভিন্ন গ্যারেজ মালিকদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কয়েকটি গ্যারেজের মালিক ও গাড়ি বেচাকেনায় জড়িত ব্যবসায়ীদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে।