মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কমিশনকে অবিচল থাকতে হবে: আইনমন্ত্রী

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কমিশনকে অবিচল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে একটি বেসরকারি হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান। 

আনিসুল হক বলেন, সকলের প্রত্যাশা উন্নত বাংলাদেশের উপযোগী মানবাধিকার পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করে যাবে। দেশ পরিচালনায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের সাথে মানবাধিকার রক্ষার বিষয় নিয়ে কমিশনের ভিন্নমত থাকতে পারে, দ্বন্দ্ব হতে পারে, সমালোচনার সম্মুখীন হতে পারে। কিন্তু কমিশনকে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অবিচল থাকতে হবে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যে লক্ষ্যে স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন গঠন করে দিয়েছেন, সেই লক্ষ্য সমুন্নত রাখতে হবে।  

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত আমরা মানবাধিকারকে ভুলুণ্ঠিত করতে দেখেছি। সেই দুঃখজনক অভিজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আইন প্রণয়ন করে মানবাধিকার রক্ষার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠন করেন। আমাদের দেশে মূলত মানবাধিকার রক্ষার চর্চা শুরু হয় সেই থেকে। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় এই কমিশনের অগ্রযাত্রা ঘটতে থাকে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার ব্যাপারে দেশ অনেকটা অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু আরও অনেক দূর আমাদের যেতে হবে। 

আইনমন্ত্রী পরামর্শ দেন, ওই সময়ে মানবাধিকার ভুলুণ্ঠিত করার যে মানসিকতা তৈরি করা হয়েছিল সেই মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হলে মানবাধিকার কমিশনকে আরও সুসংগঠিত ও সোচ্চার হতে হবে। ২০০৯ থেকে আজ পর্যন্ত এই ১৩ বছরের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এখন উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে। আমরা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হয়েছি। তাই আমাদের গুরু দ্বায়িত্ব এই উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মানবাধিকারের বিকাশ ঘটানো।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগ মানবাধিকার রক্ষার জন্য পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশনের মাধ্যমে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন- এ বিষয়ে আনিসুল হক আশান্বিত হয়েছেন বলে জানান।  

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান, কমিশনের সচিব নারায়ণ চন্দ্র সরকার প্রমুখ বক্তৃতা করেন। 

অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।