মীর কাসেমের আপিল শুনানি আগামীকাল

মীর কাসেম আলীমানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর মামলাটির আপিল শুনানি আগামীকাল মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় এসেছে। এর আগে আইনজীবী নির্ধারণ না হওয়ায় দুই দফা কার্যতালিকায় এসেও শুনানি পিছিয়েছে। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।  
জামায়াতের এই নেতা ১৯৭১ সালে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের চট্টগ্রাম শহর শাখার সভাপতি। মীর কাসেমের বিরুদ্ধে গঠন করা ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে রাষ্ট্রপক্ষ। ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। নির্যাতনের এসব অভিযোগে সর্বসম্মতভাবে মীর কাসেমকে নানা মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছয়টি অভিযোগে সাত বছর করে কারাদণ্ড, একটি অভিযোগে ২০ বছর ও অপর অভিযোগে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। চারটি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল তাকে খালাস দিয়েছেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ডালিম হোটেলের আলবদর ক্যাম্প ছিল সব অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু। সব আটক, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা এখানেই ঘটেছে। এখানে বন্দীদের ওপর দিনের পর দিন নির্যাতন করা হতো। অনেকেই এই নিদারুণ নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। তরুণ মুক্তিযোদ্ধা জসিম, টুন্টু সেন ও রঞ্জিত দাস এভাবেই প্রাণ হারিয়েছেন। এই ডালিম হোটেলের নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্বে ছিলেন মীর কাসেম আলী।

মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ডার হিসেবে মীর কাসেম চট্টগ্রাম অঞ্চলে সরাসরি মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত হন। পঁচাত্তরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জিয়াউর রহমান জামায়াতকে স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্রসংঘ নাম বদলে ইসলামী ছাত্রশিবির নামে বাংলাদেশে রাজনীতি শুরু করলে মীর কাসেম তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন।

/ইউআই/এএইচ/