দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

বুরহানের মৃত্যু: বিক্ষোভে নিহত ১১, আহত দুই শতাধিক

কথিত বন্দুকযুদ্ধে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর উত্তপ্ত কাশ্মিরে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। এই বিষয়টিকেই রবিবারের প্রধান শিরোনাম করেছে প্রভাবশালী ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

the-indian-express-10-07-2016

শনিবার (৯ জুলাই) কারফিউ আর বাধা উপেক্ষা করে বুরহান ওয়ানির মরদেহ নিয়ে রাস্তায় নামে হাজার হাজার মানুষ। বুরহানের জানাজায় অংশ নেয় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। যা ওই অঞ্চলে গত ২৬ বছর ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সবচেয়ে বড় জানাজা।

দক্ষিণ কাশ্মিরের পুলওয়ামা জেলার ট্রাল শহরের ঈদগাহে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন ধরনের বাধা উপেক্ষা করে সেখানে জড়ো হয় মানুষ। সেখানে কাশ্মিরবাসীর আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ উঠে আসে। জানাজার পর জনতার বিক্ষোভ আরও তীব্র রূপ ধারণ করে।

২২ বছর বয়সী ওয়ানি, ১৫ বছর বয়সে হিজবুল মুজাহিদিনের সঙ্গে যুক্ত হন। বুরহান তরুণদের মাঝে আইকন হয়ে হয়ে ওঠেছিলেন। মৃত্যুর পরেও তাকে ‘শহীদ’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

বিক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন পুলিশ থানা, বিজেপি অফিস এবং নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর হামলা চালান বলে জানা গেছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুই শতাধিক। তার মধ্যে ৯৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও রয়েছেন বলে পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা তিনটি থানা ও দুটি সরকারি ভবনে আগুন দিয়েছে বলে দুই পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। জম্মু-কাশ্মির পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এ এম সাহাই বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদুনে গ্যাস ও গুলি ছুড়তে ‘বাধ্য হন’ কর্মকর্তারা।” কেন্দ্র সরকার ১২০০ আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য কাশ্মিরে পাঠানোর কথা জানিয়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্যের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরের অধিকাংশ এলাকা ও দক্ষিণ কাশ্মিরের বেশ কয়েকটি এলাকায় সান্ধ্য আইন জারি করে কর্তৃপক্ষ। শ্রীনগরে ব্যাংক ও অন্যান্য অফিস, দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।

উল্লেখ্য, অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় বুরহানের বাহিনীর সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর ‘বন্দুকযুদ্ধ’ চলাকালে বুরহান নিহত হন বলে দাবি করেছে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী। অভিযানে বুরহান ওয়ানিসহ তিন হিজবুল যোদ্ধা নিহত হন। শুক্রবার সন্ধ্যায় বুরহানের মরদেহ তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। হিজবুল কমান্ডার নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রীনগর এবং দক্ষিণ কাশ্মিরের বেশ কিছু এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এর ফলে পুলওয়ামা ও শ্রীনগরের আংশিক অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়। এদিকে অশান্ত পরিস্থিতিতে ‘অমরনাথ যাত্রা’ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

কাশ্মিরে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত রাখা হয়েছে। দক্ষিণ কাশ্মীরে বন্ধ রাখা হয়েছে মোবাইল পরিষেবাও। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে কাশ্মিরের স্বাধীনতাপন্থী নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

/এসএ/