দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

অভ্যুত্থান চেষ্টায় যুদ্ধক্ষেত্র তুরস্ক

সেনা  বাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থান চেষ্টায় যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে তুরস্ক। শুক্রবার রাতে তুরস্কের সেনা প্রধানকে বন্দি করে অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয় দেশটির সেনা বাহিনীর একাংশ। এরপর থেকেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম দৈনিক পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস খবরটি প্রধান শিরোনাম প্রতিবেদন হিসেবে এ খবরটি প্রকাশ করেছে।

অভ্যুত্থান চেষ্টার এ সময়ে রাজধানী আঙ্কারাতে উপস্থিত ছিলেন না দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোয়ান। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দখল করার পর অভ্যুত্থানপন্থীরা দেশের ক্ষমতা গ্রহণের ঘোষণা দেয় এবং এরদোয়ানকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে উল্লেখ করে। সেনারা তুরস্ক জুড়ে কারফিউ জারি করে। এরপর  সেনারা রাজপথে অবস্থান নেয়। তুরস্কের পার্লামেন্ট ভবনে হামলা চালানো হয় বিমান থেকে। ছুটি কাটাতে এরদোয়ান যেখানে অবস্থান করছিলেন সেখানেও হামলা চালানো হয়। তবে এরদোয়ান তার কিছুক্ষণ আগেই ওই জায়গা ত্যাগ করেন। সেনাবাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থান ঘোষণার পর এরদোয়ান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অনুসারী ও সমর্থকদের রাজপথে নেমে অভ্যুত্থান প্রতিরোধের আহ্বান জানান।

ইমেইলে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাকারীরা একটি বিবৃতিতে জানায়, অভ্যুত্থানপন্থী সেনা অংশটি এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে। ‘শান্তি পরিষদ’ নামের ওই অভ্যুত্থানপন্থী বাহিনী জনগণকে বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তুরস্কের বড় বড় শহরগুলো এখনও গুলির শব্দে কেঁপে কেঁপে উঠেছে।

তুরস্কের সেনাবাহিনীর সরকারপন্থী অংশ দাবি করে, গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তারা ‘পুরোপুরিভাবে দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে’। সেই গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা যেখানে আইনের শাসন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায় থাকবে।

শুক্রবার রাতেই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাকারীরা বেশ কিছু সামরিক হেলিকপ্টার দখল করে নেয়। সেনা অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টাকারীদের নিয়ন্ত্রণাধীন উড়ন্ত বিমানগুলোকে ভূপাতিত করার নির্দেশ দিয়েছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়। তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম খবরটি নিশ্চিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে বিমান হামলায় অংশ নিয়েছে এফ-১৬ বিমান।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে অভুত্থানপন্থীরা জানায়, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে’ সশস্ত্র বাহিনী তুরস্কের ক্ষমতা দখল করেছে। টেলিভিশনের পর্দায় পড়ে শোনানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, এখন ‘শান্তি পরিষদ’দেশ চালাবে এবং কারফিউ ও সামরিক আইন জারি থাকবে। একই সঙ্গে তুরস্কের বিদ্যমান বৈদেশিক সব সম্পর্ক বহাল থাকবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা প্রাধান্য পাবে। কারফিউর বিরোধিতা করে এরদোয়ানের সমর্থকরা রাস্তায় নেমে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়। 

/এএ/