দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া

আরএসএসকে গান্ধীর খুনি বলায় রাহুলকে তিরস্কার সুপ্রিম কোর্টের

ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস)কে মহাত্মা গান্ধীর খুনি হিসেবে মন্তব্য করে বিপাকে পড়লেন কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধী। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার তাকে বলেন, ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দেন, কোনও সংগঠনকে এভাবে অপরাধী বলা যায় না। চলতি মাসের ২৭ তারিখে এই মামলার পরবর্তী শুনানি। এ বিষয়টি নিয়ে বুধবার শিরোনাম করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।

 Toi

২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে মহারাষ্ট্রের থানে জেলায় এক সমাবেশে রাহুল বলেছিলেন, আরএসএস মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করেছিল। অথচ আজ তাদেরই লোকজন (বিজেপি) গান্ধীজির কথা বলছেন। একসময় এরাই গান্ধীজি ও সরদার প্যাটেলের বিরোধিতা করেছিল।

রাহুলের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে আরএসএসের এক কর্মী মহারাষ্ট্রের ভিওয়ান্দি আদালতে মানহানির মামলা করেন। গত বছর সেই মামলায় রাহুল হাজিরাও দেন। আদালত তাকে দুঃখ প্রকাশের সুযোগ দিলেও রাহুল তা নেননি। বরং গত বছর সর্বোচ্চ আদালতে মামলাটি খারিজের আবেদন জানান। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি দীপক মিশ্র এবং বিচারপতি আর এফ নরিম্যানের এজলাসে মামলাটি উঠলে তারা বলেন, রাহুল দুঃখ প্রকাশে রাজি না হলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয় ২৭ জুলাই। তার আইনজীবী কপিল সিবাল থাকতে পারবেন না বলে রাহুল দুই সপ্তাহ অব্যাহতি চান। কিন্তু বিচারপতিরা সেই সময় মঞ্জুর করেননি।

রাহুলের আইনজীবী কপিল সিবালের যুক্তি ছিল, গান্ধী হত্যার সঙ্গে আরএসএসের যোগসাজশের ঐতিহাসিকতা রয়েছে। এর জবাবে বিচারপতিরা বলেন, কোনো ব্যক্তির কারণে সংগঠনের বিরুদ্ধে এমন ঢালাও নিন্দা করা যায় না। বিচারপতিরা বলেন, মানহানি আইনকে মর্যাদা দেওয়ার উদ্দেশ্য এ কারণে যে সবাই তা মানবে। না হলে সমাজে সম্প্রীতির জায়গায় স্বৈরাচার প্রাধান্য পাবে। কপিল সিবালের আরও যুক্তি ছিল, মানহানি আইন সংবিধানের বাক্‌স্বাধীনতার পরিপন্থী। বিচারপতিরা সেই যুক্তিও নস্যাৎ করে দিয়ে বলেন, স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার কোনো কারণ নেই। আইনের লক্ষ্য মানুষ যাতে অযথা মামলায় না জড়ায়।

সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আরএসএসের মুখপাত্র এম জি বৈদ্য বলেন, কংগ্রেস বহুদিন ধরেই আরএসএসের বিরুদ্ধে কুৎসা ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বোচ্চ আদালতের আজকের মন্তব্য কংগ্রেসের চরিত্র প্রকাশ করে দিয়েছে।

/এমপি/