মঙ্গলবার ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে দলীয় সম্মেলনে রিপাবলিকানরা আনুষ্ঠানিকভাবে দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ব্যবসায়ী ট্রাম্পকে বেছে নিয়েছেন।
ট্রাম্পের প্রার্থিতা নিশ্চিত হওয়ার বিষয়টিকে মার্কিন রাজনীতির জন্য একটি স্মরণীয় ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ, যাকে একসময় উপহাস করা হতো, তিনিই এখন হোয়াইট হাউসে যাওয়ার জন্য লড়বেন।
মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ট্রাম্প রিপাবলিকান ডেলিগেটদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, এই মনোনয়ন একটি সম্মান। এখন ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থীকে হারানোর পালা।
ট্রাম্পের ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র বলেন, প্রতিনিধিদের ভোটে সবার ওপরে থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম ঘোষণা করতে পেরে সম্মানিত তিনি। বাবাকে অভিনন্দনও জানান ট্রাম্প জুনিয়র।
ট্রাম্পের মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইটা মোটেও সহজ ছিল না। তাকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। বাছাইপর্বে এক ডজনের বেশি প্রতিদ্বন্দ্বীকে মোকাবিলা করতে হয়েছে। বাছাইপর্বে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ডেলিগেট পাওয়ার পরও তার মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তাকে নিজ দলের ভেতরেই তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছে। তাকে বাদ দেওয়ার জন্য শেষ মুহূর্তেও নানা তোড়জোড়ের খবর মেলে। বিরুদ্ধে পথের পথিক ট্রাম্পের চোখ এখন হোয়াইট হাউসের দিকে।
ওহাইও রাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে রিপাবলিকান পার্টির কনভেনশনের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প। গত সোমবার সম্মেলনের প্রথম দিন নিজের স্বামীকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তার। স্লোভেনিয়া বংশোদ্ভূত এই সাবেক মডেল ও ব্যবসায়ী যথেষ্ট যোগ্যতার সঙ্গে সে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে শেষটা ভালো হয়নি। কারণ, মেলানির ভাষণ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খবর ছড়িয়ে গেল, সে ভাষণ ২০০৮ সালে মিশেল ওবামা তার স্বামী বারাক ওবামাকে পরিচয় করিয়ে দিতে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তা থেকে চুরি করা। ফলে প্রথম দিন নির্বিঘ্নে শেষ হলেও বিতর্কে জড়িয়ে পড়লো রিপাবলিকান কনভেনশন।
দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর সম্মেলনের চতুর্থ দিন ট্রাম্পের ভাষণ দেওয়ার কথা। কিন্তু প্রচলিত নিয়ম বদলে প্রথম দিনই তিনি আবির্ভূত হন এই দিনের প্রধান আকর্ষণ তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পকে পরিচয় করিয়ে দিতে।
চার দিনের এই সম্মেলনকে ট্রাম্প বিষয়ভিত্তিকভাবে সাজিয়েছেন। প্রথম দিনের বিষয় ছিল, ‘মেক আমেরিকা সেফ অ্যাগেইন’ (যুক্তরাষ্ট্রকে আবার নিরাপদ করুন)। অধিকাংশ বক্তাই প্রেসিডেন্ট ওবামা ও তার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের হাতে দেশের মানুষ কতটা ‘নিরাপত্তাহীন’ ও বিশ্বের মানুষের কাছে এই দেশ এখন কী রকম ‘পরিহাসের বিষয়’ হয়ে পড়েছে, তার ফিরিস্তি হাজির করেন।
সন্ধ্যার দিকে মঞ্চে আসেন এমন সব বক্তা, যারা ওবামা-হিলারির অনুসৃত নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা ও জাতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থায় ‘বিঘ্ন ঘটার’ নজির তুলে ধরেন।
/এমপি/