ভারতের দলিত জনগোষ্ঠীর নেত্রী ও বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান মায়াবতীকে একজন ‘বেশ্যা’র সঙ্গে তুলনা করেছিলেন দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র জ্যেষ্ঠ নেতা দয়াশঙ্কর সিং। এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে শেষ পর্যন্ত ওই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি। এ বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার শিরোনাম করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
দল থেকে দয়াশঙ্কর সিংকে শুধু বহিষ্কারই করা হয়নি; উত্তরপ্রদেশের পুলিশও এখন তাকে খুঁজছে। পার্লামেন্ট তার ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ভারতর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
বুধবার ভারতের পার্লামেন্টে এই মন্তব্যের প্রতিবাদে তুমুল হইচই করেছেন মায়াবতী। তার দাবি, দলিত সমাজের চোখে তিনি একজন দেবী। তাই তারা দয়াশঙ্কর সিংয়ের কথায় ক্ষুব্ধ ও ক্রুদ্ধ।
এদিকে ভারতের আরেক নারী রাজনীতিক ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতাও মায়াবতীর সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ইতোপূর্বে তাকেও একই রকমের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
জয়ললিতা বলেন, ‘‘মায়াবতী আমার বোনের মতো। তার বিরুদ্ধে যখন এ ধরনের কথা বলা হয়, তখন সত্যিই আমার বুক কাঁপে। আমি আশা করব নারী রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে এ ধরনের আক্রমণ বন্ধ হবে’’।
দল থেকে বহিষ্কারে আগে দয়াশঙ্কর সিং ছিলেন উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে বিজেপির ভাইস-প্রেসিডেন্ট। সাংবাদিকদের সামনে বলা তার একটি বেফাঁস মন্তব্য সামনে আসার পরই এই বিতর্কের সূত্রপাত।
উত্তরপ্রদেশের মৌ-তে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক ক্যামেরার সামনে দয়াশঙ্কর সিং বলেছিলেন, মায়াবতী যেভাবে নিজের দলের মনোনয়ন দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের কাছে টিকিট বিক্রি করেন তাতে বোঝা যায় তার চরিত্র ‘‘বেশ্যারও অধম’’। সকালে একজন এক কোটি টাকা নিয়ে এলে তাকে তিনি টিকিট দেবেন বলে কথা দেন। দুপুরে দুই কোটি টাকা নিয়ে অন্য কেউ এলেই সেই সিদ্ধান্ত বদলে যায়। আবার বিকেলে তিন কোটি টাকা নিয়ে কেউ এলেই সে আবার টিকিট পেয়ে যায়। তো যার চরিত্র এই রকম, তাকে বেশ্যা ছাড়া আর কীই বলা যায়? এমনকি বেশ্যারাও একবার কাউকে কথা দিলে কথা রাখে।
এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর গত কদিন ধরে ভারতের পার্লামেন্টে তুলকালাম চলছে। মায়াবতী-সহ বিরোধী দলের চাপের মুখেই আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চান বিজেপি নেতা ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
অরুণ জেটলি বলেন, ‘একজন বিজেপি নেতা এই ধরনের মন্তব্য করেছেন জেনে আমি অত্যন্ত বিচলিত বোধ করছি। আমি মায়াবতীজিকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই আমরা পুরোপুরি তার পাশে আছি।
মায়াবতী অবশ্য দাবি করেছেন, দয়াশঙ্কর সিং’কে শুধু দল থেকে বহিষ্কার করলেই হবে না, বরং তাকে গ্রেফতার করতে হবে।
/এমপি/