দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

নিহত মুসলিম সেনার মাকে নিয়ে মন্তব্য করে তোপের মুখে ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনীত প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বিতর্কের মুখে পড়েছেন। রিপাবলিকান দলের কনভেনশনে তার সমালোচনাকারী নিহত মুসলিম-আমেরিকান সেনার বাবার বক্তব্যের জবাবে ট্রাম্পের বক্তব্য এ বিতর্ক ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, মুসলিম হওয়ার কারণেই কনভেনশনে বক্তব্য দিতে পারেননি নিহত সেনার মা।

ইরাক যুদ্ধে নিহত সেনা কর্মকর্তা হুমায়ুন খানের বাবা খিজির খান বৃহস্পতিবার বৃহস্পতিবার ডেমোক্রেটিক দলের কনভেনশনে বলেন, সমাধিক্ষেত্রগুলোর দিকে তাকান, যেখানে শুয়ে আছেন সাহসী দেশপ্রেমিকরা। যারা আমেরিকাকে রক্ষায় প্রাণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, সেখানে আপনি পাবেন সকল ধর্মের, সকল লিঙ্গের এবং সকল জাতির দেশপ্রেমিকদের যারা দেশের জন্যে প্রাণ দিয়েছেন। কিন্তু দেশের জন্যে আপনার কোন ত্যাগই নেই।

এ সমালোচনার জবাবে এবিসি নিউজকে দেওয়া  এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্প খিজির খানের সমালোচনার জবাবে বলেন, দেশের জন্যে তিনিও অনেক ত্যাগ করেছেন। ট্রাম্প বলেন, আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমি হাজার হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। আমার রয়েছে ব্যাপক সাফল্য। আমি মনে করি আমি অনেক করেছি।

প্রচারণাকালে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার কথা বলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, খিজির খানের বক্তব্য কার লেখা? হিলারির বক্তব্য যারা লেখেন তারাই কী?

এর আগে খিজির খান বলেছেন, তিনি ও তার স্ত্রী গাজালা মিলে বক্তব্যটি লেখেন।

ট্রাম্পের এ কথার জবাবে গাজালা এবিসি নিউজকে বলেন, গভীর শোকের কারণে ডেমোক্রেটিক দলের কনভেনশনে কিছু বলার ইচ্ছে তার হয়নি।
তিনি বলেন, আমি মনে করি না ত্যাগের অর্থ ট্রাম্প বোঝেন। কারণ আমি যখন ওখানে দাঁড়ানো ছিলাম সমস্ত আমেরিকাই আমার কষ্ট অনুধাবন করেছে। একটি কথা না বললেও তারা আমার এ ব্যাথা বুঝতে পেরেছে।

খিজির খান বলেন, আমি তাকে কিছু বলতে বলেছিলাম । কিন্তু তিনি রাজি হননি। কারণ গাজালা জানতেন তিনি কিছু বলতে গেলে খুব আবেগতাড়িত হয়ে পড়তেন।

খিজির খান ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, আমাদের বক্তব্য বোঝার ক্ষমতা ট্রাম্পের নেই। তার কোনও ভদ্রতা জ্ঞান নেই। তিনি ভদ্রতা জ্ঞান শূন্য। তার হৃদয় কলুষিত।

শনিবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্প নিহত ক্যাপ্টেন খানের প্রশংসা করে বলেন, তিনি আমাদের দেশের হিরো। যারা আমাদের দেশকে নিরাপদ করতে জীবন দিয়েছেন তাদের সবার প্রতি আমাদের সম্মান জানানো উচিত।

এদিকে ট্রাম্প কখনোই মার্কিন সংবিধান পড়েননি খিজির খানের এ অভিযোগও নাকচ করেন রিপাবলিকান এ প্রার্থী।ট্রাম্প বলেন, আমি কখনও সংবিধান পড়িনি লাখ লাখ লোকের সামনে দাঁড়িয়ে এ কথা বলার কোনও অধিকার খিজির খানের নেই। যদিও তার অভিযোগটি মিথ্যে।
ওহাইয়োর গভর্নর জন কাসিচ, যিনি মনোনয়নপ্রত্যাশার লড়াইয়ে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন, তিনি বলেছেন, নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবার নিয়ে কথা বলার একমাত্র উপায় সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে কথা বলা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, ট্রাম্প স্বাভাবিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন না।

/এএ/