দ্য হিন্দু

উত্তর-পূর্ব ভারতে বন্যায় নিহত ৮৫, বাস্তুচ্যুত ৬৮ লাখ

বন্যা কবলিত উত্তর-পূর্ব ভারতে ৮৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আসাম মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ, বিহার, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলা বন্যা বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে। প্রবল বর্ষায় জলাধার উপচে জল পড়ে ভাসিয়ে দিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এর সঙ্গে চলছে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি। এসব এলাকায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৬৮ লাখ মানুষ। রবিবার ভারতের অন্যতম দৈনিক পত্রিকা দ্য হিন্দু খবরটি প্রধান শিরোনাম প্রতিবেদন হিসেবে প্রকাশ করেছে।

বন্যা কবলিত বিভিন্ন জায়গা বিমানপথে পরিদর্শন করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। বন্যা পরিস্থিতিকে তিনি ভয়াবহ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ভারতের জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা দল, রাজ্যগুলোর উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় প্রশাসন মিলে বন্যায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করে নিয়ে আসছেন। আসামে বন্যার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সেই রাজ্যে ৩৭ লাখ মানুষ ইতোমধ্যে ঘরছাড়া হয়েছেন। কাজিরাঙা জাতীয় অভয়ারণ্যের ৮০ শতাংশ ডুবে গিয়েছে।

বিহারেও ২৬ লাখের বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পূর্ব চম্পারণ ও মুজাফফরপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বন্যায়।

অন্যদিকে ওড়িশার ভদ্রকে ৮ জন, বালাসোরে ৭ জন, খুরদায় ৫ জন ও ময়ূরভঞ্জে ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্রপাড়া, জয়পুর, কেওনঝাড় ও নয়াগড় থেকেও বন্যায় মৃত্যুর খবর এসেছে।

শনিবার আসামের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী সোনোয়ালকে সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে মোরিগাঁও জেলা ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেন রাজনাথ সিং। পরে জাগি ভকতগাঁওয়ে ত্রাণসামগ্রী বণ্টন করেন এবং মৃতদের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দেন।

সাংবাদিকদের রাজনাথ বলেন, ‘ভাবতে পারিনি পরিস্থিতি এতটা খারাপ। মুখ্যমন্ত্রী এবং তার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সমস্যাটা চ্যালেঞ্জের আকার নিয়েছে।’

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আসাম সরকারের তত্পরতার প্রশংসা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আসামের রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিলে এই মুহূর্তে ৬২০ কোটি রুপি রয়েছে। এই অর্থ নির্দ্বিধায় খরচ করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। প্রয়োজনে আরও সাহায্য পাঠানোর আশ্বাসও দিয়েছেন রাজনাথ।

সাংবাদিকরা জানতে চান, আসামের পরিস্থিতিকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করা হবে কিনা। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তেমন পরিকল্পনা কেন্দ্রের নেই। তিনি বলেন, ‘বন্যাকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করে দিলেই সমাধান হবে না। কেন এই বন্যা হল, কীভাবে তার মোকাবিলা সম্ভব, সেগুলো ভাবতে হবে। এ বিষয়ে রাজ্যকে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

/এএ/