দ্য গার্ডিয়ান

রক্ত ঝরছে, কিন্তু ঘটনা জানা নেই তার


The Guardianবিমান হামলায় প্রাণে বেঁচে যাওয়ার পর হতভম্ব ও রক্তাক্ত অবস্থায় একটি অ্যাম্বুলেন্সের পেছনের আসনে বসে আছে এক শিশু। বয়স ৫ বছরের মতো হবে। নাম ওমরান দাকনিশ। সিরিয়ার ক্ষমতাসীন আসাদ বাহিনীর বিমান হামলায় প্রাণে বেঁচে গেলেও আহত হয় সে। ছবিতে দেখা যায়, ওমরানের মাথা থেকে হাঁটু পর্যন্ত ধূলায় ভরে গেছে। হামলায় আহত হয়ে কপাল বেয়ে রক্ত ঝরলেও ঠিক কি ঘটেছে; কেন এমন বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে সেটা জানা নেই এই ছোট্ট শিশুর। এ বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার প্রধান শিরোনাম করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ আর আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে চলমান লড়াইয়ের ভয়াবহতার সাক্ষী এ শিশুর ছবিটি এরইমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। তুরস্ক উপকূলে ভেসে ওঠা সিরীয় শরণার্থী শিশু আয়লানের মতো ওমরানও যেন আরেক বিপন্ন মানবতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

১৭ আগস্ট ২০১৬ বুধবার আলেপ্পো শহরে সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় পাঁচ শিশু আহত হয়। এদের মধ্যে ওমরানও একজন।

একটি ভিডিও থেকে ওমরানের স্থির ছবিটি নেওয়া হয়েছে। ভিডিওটি মূলত ধারণ ও প্রচার করেছে সিরিয়ার সরকারবিরোধী গোষ্ঠী আলেপ্পো মিডিয়া সেন্টার। পরে তারা ইউটিউবে ভিডিও ক্লিপটি পোস্ট করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিটি হাজার হাজার শেয়ার হয়েছে। টুইটারে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের প্রতিনিধি রাফ স্যানশেজ প্রথম ওমরানের ছবিটি পোস্ট করেন। পরে সেখানেও ১০ হাজার বার ছবিটি রিটুইট হয়েছে।

স্থানীয় এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, বুধবার পাঁচ শিশু ছাড়াও এক নারী ও দুই তরুণও ওই হামলায় আহত হয়েছেন।

এম টেন হাসপাতালে ওমরানকে তার মাথার আঘাতের চিকিৎসা দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার আরও ১২ শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক। তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৫ বছরের নিচে।

এর আগে গতবছর, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচার আশায় ইউরোপে যাওয়ার জন্য মা-বাবা ও পাঁচ বছরের এক ভাইয়ের সঙ্গে নৌকায় পাড়ি জমিয়েছিল তিন বছর বয়সী শিশু আয়লান। কিন্তু তুরস্কের উপকূলে ডুবে যায় তাদের নৌকা। পরে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর উপকূলে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার হয় আয়লানের মরদেহ। সে সময় থেকে আয়লান হয়ে ওঠে বিপন্ন মানবতার প্রতীক।

/এমপি/