আনাদোলু পোস্ট

‘দায়েশকে নির্মূল করতেই সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযান’

Anadolu Postতুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলেছেন, সীমান্তে দায়েশকে (আইএস) নির্মূল করতেই সিরিয়ায় সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বুধবার আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার শিরোনাম করেছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু পোস্ট।

তুরস্ক সফররত এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, তুরস্ক সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। কারণ আঙ্কারা দায়েশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে নির্ণায়ক ভূমিকা নিয়েছে।

এদিকে তুর্কি সেনাবাহিনী ও মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলার সুবাদে সিরিয়ার কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর জারাব্লুসের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সিরিয়ার আসাদবিরোধী বিদ্রোহীরা।

বুধবার তুর্কি সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্ক এবং হাজার হাজার সিরীয় বিদ্রোহী দীর্ঘদিন ধরে আইএসের দখলে থাকা তুর্কি সীমান্তবর্তী সিরীয় শহর জারাব্লুসের কেন্দ্রে প্রবেশ করে। স্থল অভিযানের সহায়তায় ছিল মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের যুদ্ধবিমান। মাত্র কয়েক ঘন্টার অভিযানেই শহরটি আইএস-এর দখল থেকে মুক্ত হয়।

সিরিয়ার বিদ্রোহী সংগঠন ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’র এক কমান্ডার দাবি করেছেন, ‘এখন জারাব্লুসকে স্বাধীন বলে মনে করা যেতে পারে।’ অপর এক বিদ্রোহী কমান্ডার জানান, জারাব্লুসের আইএস সদস্যরা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় আল-বাব শহরের দিকে পালিয়ে গেছে।

বিদ্রোহীরা জানিয়েছেন, তুরস্ক সীমান্ত থেকে অভিযান শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিদ্রোহীরা কয়েকটি গ্রাম দখল করে নেয়। পরে শহরটিকে ঘিরে থাকা পাহাড়গুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কয়েক  ঘন্টার মধ্যেই জারাব্লুস থেকে আইএস জঙ্গিরা পালাতে শুরু করে।

গত দুই বছর ধরে জারাব্লুস আইএস-এর দখলে ছিল।

এর আগে বুধবার অপর এক সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন, তুর্কি অভিযান কেবল দায়েশ জঙ্গিদের জন্য নয়। তুর্কি বাহিনী একইসঙ্গে কুর্দি যোদ্ধাদের ওপরও হামলা চালাবে। 

উল্লেখ্য, সোমবার সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে কুর্দিদের পিপল’স প্রটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি) ও ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর বিরুদ্ধে পৃথক সামরিক অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক।  তুর্কি সেনাবাহিনী সীমান্ত শহর জারাব্লুসে গোলাবর্ষণ করে। একই সঙ্গে মানবিজের কাছে কুর্দি ওয়াইপিজি-র অবস্থান লক্ষ্য করেও হামলা চালায় তুরস্ক। একজন তুর্কি কর্মকর্তা জানান, ওয়াইপিজে’কে লক্ষ্য করে ২০টি হামলা চালানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি ওয়াইপিজি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে তুরস্ক। ওয়াইপিজি’কে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-এর একটি শাখা বলে মনে করে আঙ্কারা। ১৯৮০-র দশক থেকে কুর্দিদের স্বাধীনতার জন্য তুরস্ক সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করে আসছে পিকেকে।

কুর্দি যোদ্ধারা আইএস-বিরোধী লড়াইয়ে মার্কিন মিত্রশক্তি। কিন্তু কুর্দিদের প্রতি মার্কিন সমর্থনকে বরাবরই নেতিবাচকভাবে দেখে আসছে তুরস্ক।

/এমপি/