দ্য হিন্দু

৫১ দিন পর কাশ্মিরে কারফিউ প্রত্যাহার

অবশেষে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ৫১ দিন ধরে চলা কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ৪ সেপ্টেম্বর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর কাশ্মির সফরকে সামনে রেখে কারফিউ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। এই কারফিউ প্রত্যাহারের বিষয়টিকেই মঙ্গলবার প্রধান শিরোনাম করেছে ভারতীয় পত্রিকা দ্য হিন্দু।

the-hindu-30-august

সোমবার থেকে পুলওয়ামা ও শ্রীনগরের কয়েকটি এলাকা বাদে কাশ্মিরের বাকি এলাকাগুলো কারফিউর আওতামুক্ত বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি কেবল শ্রীনগরের কয়েকটি এলাকার থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছিল। আর সোমবার কাশ্মিরের বেশিরভাগ এলাকার কারফিউ প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও এসব জায়গায় ১৪৪ ধারার আওতায় লোকজনের জমায়েতের ওপর কড়াকড়ি বহাল থাকছে। অর্থাৎ, কোনও জায়গায় ১০ জন কিংবা তার বেশি মানুষ জড়ো হতে পারবেন না।

উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই কাশ্মিরের অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় সেনা ও পুলিশের বিশেষ বাহিনীর যৌথ অভিযানে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানিসহ তিন হিজবুল যোদ্ধা নিহত হওয়ার পর কাশ্মিরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ কাশ্মিরিদের দাবি, বুরহানকে ‘ভুয়া এনকাউন্টারে’ হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রথমে পুলওয়ামা ও শ্রীনগরের কিছু অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়। পরবর্তীতে বিক্ষোভের মাত্রা বেড়ে গেলে পুরো কাশ্মিরজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়। বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে আসেন সাধারণ মানুষ। আর বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা জারি রাখে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭০ জন। সম্প্রতি শ্রীনগরের কয়েকটি এলাকা থেকে কারফিউ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপরও জারি থাকে বিক্ষোভ ও পুলিশি হত্যাকাণ্ড। অবশেষে এতদিন পর কাশ্মির উপত্যকার বেশিরভাগ এলাকা থেকে তুলে নেওয়া হল কারফিউ।

জম্মু ও কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি রাজনৈতিক অস্থিরতা কমাতে ও সংকটের সমাধান করতে তাকে একটি সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কাশ্মিরের প্রতিবাদী তরুণদের প্রতি। শনিবার তিনি কাশ্মির পরিস্থিতি আলোচনা করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন।

কারফিউ প্রত্যাহার করা হলেও ১৪৪ ধারা জারি থাকছে

তিনি জানান, তার দল পিডিপি ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপির যৌথ এজেন্ডা বাস্তবায়িত হয়নি। কিন্তু মোদি কথা দিয়েছেন তিনি এই প্রক্রিয়া তরান্বিত করবেন। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে ৪৫ মিনিট দীর্ঘ বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে, কাশ্মিরের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর জোট হুরিয়ত কনফারেন্সের নেতারা ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হরতালের ঘোষণা দিয়েছেন।

কাশ্মির পরিস্থিতির অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক করতে ৪ সেপ্টেম্বর কাশ্মির সফর করার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার নেতৃত্বে বিজেপি-র প্রতিনিধি দল কাশ্মিরের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের বিষয়ে আলোচনা করবেন। তবে স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর জোট হুরিয়ত কনফারেন্সের নেতারা সেই তালিকায় নেই। হুরিয়তের প্রধান তিন নেতাকে আটক করা হয়েছে আগেই।

এবারের সংঘর্ষে ৭০ কাশ্মিরি নিহত হওয়া ছাড়াও আহতের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে ছয় হাজারেরও বেশি কাশ্মিরি আহত হয়েছেন।

/এসএ/