দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট

রাশিয়াকে গোপন গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছেন ট্রাম্প

The Washington Postরাশিয়ার কাছে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ গোপন রাষ্ট্রীয় তথ্য ফাঁস করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৯ মে (মঙ্গলবার) হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল ফাঁসের তদন্ত প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলে এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।  এর একদিন পরই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলাককে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তারা দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-কে জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে বৈঠকের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় তথ্য পাচার করেন। এ বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার শিরোনাম করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের ফাঁস করা তথ্যের মধ্যে তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের একটি পরিকল্পনার কথাও রয়েছে। কথা বলার সময় ট্রাম্প নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আইএস নিয়ে বিস্তারিত কথা বলতে থাকেন।  এক পর্যায়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি এমন এক তথ্য দিয়ে ফেলেন, যা অন্য সহযোগীদের কাছেও ফাঁসের অনুমতি ছিল না।

তথ্য আদান-প্রদান চুক্তির আওতায় পাওয়া ওইসব তথ্য ফাঁসে  এখন দুই দেশের মাঝে সম্পর্ক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, ‘এই তথ্য খুবই স্পর্শকাতর। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার এই তথ্য আমরা কারও সঙ্গেই বিনিময় করিনি। ট্রাম্প রুশ রাষ্ট্রদূতকে এমন কথা বলেছেন যেটা আমরা মিত্রদেরকেও বলি না।’

ট্রাম্পের বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসের সিনিয়র কর্মকর্তারা এই সমস্যা সমাধানে সিআইএ ও এনএসএ এর মতো গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ফোন করে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করেন।

আগে থেকেই রুশ সংযোগ নিয়ে চাপে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত সপ্তাহে এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্ত করার পর এই বিতর্ক আরও বেড়ে গেছে। ডেমোক্রেটদের দাবি নিজের রুশ সংযোগ আড়াল করতেই এমনটা করেছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার। তিনি বলেছেন, ''যেভাবে ঘটনাটি তুলে ধরা হয়েছে, তা মিথ্যা। প্রেসিডেন্ট (ডোনাল্ড ট্রাম্প) এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী (সের্গেই লাভরভ) উভয় দেশের জন্য যেসব হুমকি রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে বিমান চলাচলের বিষয়ও রয়েছে। কোন পর্যায়েই কোনরকম গোয়েন্দা তথ্য বা কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়নি।''

বৈঠকে উপস্থিত হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, ট্রাম্প শুধু সন্ত্রাসবাদ নিয়ে নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, ‘দুই দেশ সন্ত্রাসবাদের কারণে যে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে তা নিয়ে প্রেসিডেন্ট আলোচনা করেছেন। কোনওরকম গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে ট্রাম্প আলোচনা করেননি।’

এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, ট্রাম্প কোনওরকম গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস করেননি। এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সিআইএ। আর এনএসএও কোনও সাড়া দেয়নি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ এবং ট্রাম্পের প্রচারণা দল মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল বলে অভিযোগের মধ্যেই কোমিকে বরখাস্ত করে বিতর্ক উসকে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন ওই বিতর্ককে আরও জোরালো করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।  উল্রেথ্য, নির্বাচনী প্রচারণার সময় অনেকবারই ডোনাল্ড ট্রাম্প রাষ্ট্রীয় স্পর্শকাতর তথ্যের ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে খোঁচা দিয়েছেন।

/এমপি/