সৌদি গেজেট

‘ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এক টার্নিং পয়েন্ট’

SGদুই দিনের সৌদি আরব সফর শেষে বর্তমানে ইসরায়েলে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ সফর নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট রিয়াদ। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ ট্রাম্প বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার দেশের আলোচনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক টার্নিং পয়েন্ট। সোমবার আল ইয়ামামা প্যালেসে মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন সৌদি বাদশাহ। এ বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার শিরোনাম করেছে সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেট।
এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফর নিয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ভাষণ দেন সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ। এতে তিনি বলেন, 'আল্লাহ ও জনগণের প্রতি আমাদের দায়িত্ব সবার আগে। অশুভ ও জঙ্গিবাদ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের পুরো বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।'

ভাষণে সৌদি বাদশা বলেন, যারা সন্ত্রাসবাদকে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা দেয় তাদের প্রতি নমনীয় হবে না সৌদি আরব। আইনের সর্বশক্তি দিয়ে তাদের মোকাবিলা করা হবে।

সৌদি বাদশার আমন্ত্রণে আরব-ইসলামিক- আমেরিকান (এআইএ) সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ দমনে কার্যকর নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন এতে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রনেতারা।

সম্মেলনের ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের ইসলামি উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এগিয়ে আসা ও নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ে ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরে ট্রাম্প বলেন, কিন্তু আমরা অশুভকে পরাজিত করতে পারব যদি সব মহৎ শক্তি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী থাকি। এই কক্ষে উপস্থিত সবাই যদি এই বোঝার ভাগ সমানভাবে বহন করি। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর উচিৎ নয় তাদের শত্রুদের ধ্বংস করার জন্য আমেরিকার শক্তির অপেক্ষায় থাকা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে তারা দেশের, নিজেদের ও তাদের শিশুদের জন্য কেমন ভবিষ্যৎ চায়।

ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘এই যুদ্ধ বিভিন্ন ধর্মের, বিভিন্ন গোষ্ঠীর বা বিভিন্ন সভ্যতার নয়। এই লড়াই সেই সব নৃশংস অপরাধীদের বিরুদ্ধে যারা মানুষের জীবন কেড়ে নিতে চায়, সব ধর্মের ভালো মানুষ যারা জীবন রক্ষা করতে চায় তাদের হত্যা করতে চায় এসব অপরাধীরা। এই লড়াই ভালো এবং অশুভের। এর মানে হচ্ছে সত্যিকার অর্থে ইসলামি জঙ্গিবাদ ও ইসলামি সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করা। এর মানে হচ্ছে নিরাপরাধ মুসলিমদের হত্যা, নারীদের ওপর নিপীড়ন, ইহুদিদের হত্যা ও খ্রিস্টানদের গলাকেটে হত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু শান্তির পথ এখানেই রয়েছে, এই প্রাচীন ও পবিত্র মাটিতে।’ 

দুই মাস আগে ক্ষমতাগ্রহণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছয়টি মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সংশোধিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। শুরু থেকেই ট্রাম্পের এ আদেশকে পরোক্ষ মুসলিম নিষেধাজ্ঞা হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। নির্বাচনি প্রচারণার সময়ও একের পর এক মুসলিমবিরোধী বক্তব্য দিয়ে তুমুল সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। এবার সেই ট্রাম্পই সৌদি আরব সফরে এসে ইসলাম ও মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের উদ্দেশ্যে এই ভাষণ দিলেন।

মুসলিম বিদ্বেষী বলে পরিচিতি পাওয়া ট্রাম্প বলেন, আমেরিকা একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং সব সময় আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে নিজ দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা। আমরা এখানে লেকচার দিতে আসিনি, মানুষ কিভাবে বাঁচবে তা বলতে আসিনি এখানে। কী করতে হবে, কে করবে বা কিভাবে প্রার্থণা করতে হবে তা বলতে আসিনি। আমরা এখানে এসেছি অংশীদারিত্বের প্রস্তাব নিয়ে। যার ভিত্তি হবে পারস্পরিক স্বার্থ। যা সবার জন্য ভালো ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে।

/এমপি/