গালফ টাইমস

হ্যাকিং করে আমিরাত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে: কাতার

Gulf Timesকাতারের সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করার মধ্য দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছে দোহা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কাতারের হ্যাকিংয়ে আরব আমিরাত জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার শিরোনাম করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ টাইমস।

নতুন করে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিশ্চিত হয়েছে হ্যাকিংয়ের সঙ্গে আমিরাতের সংযোগ রয়েছে। তারা জানতে পেরেছে গত ২৩ মে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা হ্যাকিংয়ের পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। আর তার পরদিনই কাতার সরকারের সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়। তবে আমিরাতি কর্তৃপক্ষ সরাসরি হ্যাক করেছে নাকি চুক্তির ভিত্তিতে কাউকে দিয়ে হ্যাকিং চালিয়েছে তা নিশ্চিত করা হয়নি। ওয়াশিংটন পোস্টে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর পরই তা নাকচ করে দেয় আরব আমিরাত। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, খবরটি সত্য নয়।

ওয়াশিংটন পোস্টে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কাতার। সোমবার কাতার সরকারের যোগাযোগ কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত খবরের মধ্য দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্মকর্তাদের হ্যাকিংয়ে জড়িত থাকার তথ্য বের হয়ে এসেছে। এ খবরটির মধ্য প্রমাণ হয় হ্যাকিংজনিত অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড স্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক আইন ও উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতাজনিত চুক্তির লঙ্ঘন। একইসঙ্গে আরব লিগ, ওআইসি এবং জাতিসংঘের সঙ্গে হওয়া সম্মিলিত চুক্তিরও লঙ্ঘন এটি।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে এবং সরকারের প্রসিকিউটররা স্থানীয় ও বৈদেশিকভাবে ‘আইনি পদক্ষেপ’ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

মে মাসের শেষের দিকে কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কাতার নিউজ এজেন্ট (কিউএনএ) এবং সরকারি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়। হ্যাকাররা কিউএনএ’র ওয়েবসাইটে একটি ভুয়া প্রতিবেদন যুক্ত করে দেয়। ওই প্রতিবেদনে  দেখা যায়, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ইরান, হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলকে সমর্থন জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় টিকে থাকবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। তবে, শুরু থেকেই কাতার দাবি করে আসছে দেশটির আমির কখনওই এ ধরনের মন্তব্য করেননি বরং কিউএনএ’র ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত আমিরাতি দূত ইউসেফ আল ওতাইবা ওয়াশিংটন পোস্টের খবরটিকে নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন: “আর্টিকেলে হ্যাকিং নিয়ে যা যা অভিযোগ করা হয়েছে; সেগুলোর কোনওটিই আমিরাত করেনি....এটাই হলো কাতারের সত্যিকারের আচরণ। তালেবান থেকে শুরু করে হামাস এবং গাদ্দাফি পর্যন্ত জঙ্গিদের অর্থায়ন ও সমর্থন দেওয়াটা তাদের কাজ। সহিংসতায় উস্কানি দেওয়া, চরমপন্থাকে উৎসাহিত করা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর স্থিতিশীলতা নষ্ট করাটা কাতারের স্বভাব।’

/এমপি/