দ্য হিন্দু

ভারতের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে চার বিচারপতির মতবিরোধ

ভারতের প্রধান বিচারপতি দিপক মিশ্রার সঙ্গে মতবিরোধের কথা বলেছেন  দেশটির চার জ্যেষ্ঠ বিচারপতি। তার বিরুদ্ধে বেছে বেছে নির্দিষ্ট কিছু বেঞ্চে মামলা বণ্টন করার অভিযোগও এনেছেন তারা। শুক্রবার এক নজিরবিহীন সংবাদ সম্মেলনে জনসম্মুখে তারা এ অভিযোগ করেন। ভারতের শীর্ষ স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ শনিবার খবরটিকে তাদের প্রধান শিরোনাম করেছে।  

Capture

রীতি না থাকায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা অতীতে কখনও সরাসরি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি। আদালতে বিচার কাজ পরিচালনায় নিরপেক্ষতা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে বিচারপতিরা সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন না। তবে শুক্রবার দিল্লিতে বিচারপতি জে চেলামেশ্বরের বাড়িতে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে চেলামেশ্বর ছাড়াও প্রবীণ বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ, বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি মদন লোকুর উপস্থিত ছিলেন।

শীর্ষ আদালতে মামলা বণ্টন, বিচারপতিদের নিয়োগ থেকে শুরু করে আরও নানান বিষয়ে গরমিলের অভিযোগ তুলেন বিচারপতিরা। তারা কথা বলেন ‘বিচারবিভাগের ভিতরে দুর্নীতি’ নিয়েও। ওই চার বিচারপতির দাবি, যেসব মামলার ফল ভারতের রাষ্ট্র এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সুদুরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হয়, প্রধান বিচারপতি সেই সব মামলা বেছে বেছে তার পছন্দসই কিছু বেঞ্চে পাঠান। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর কাছে এসব বিষয়ে বার বার তাদের উদ্বেগ তুলে ধরার পরও তিনি কর্ণপাত করেননি অভিযোগ করেন এই চারজন। তারা বলেন, এরপর জাতির সামনে হাজির হওয়া ছাড়া তাদের সামনে আর কোন বিকল্প ছিল না।

বিচার বিভাগের দুর্নীতি এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক দিন ধরেই একটা চাপা অসন্তোষ চলছিল। সুপ্রিম কোর্টের এই চার ক্ষুব্ধ বিচারপতি একটি চিঠিও বিলি করেছেন যেটি তারা এর আগে প্রধান বিচারপতিকে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। চিঠিতে তারা বেশ কিছু বিচারিক নির্দেশের ব্যাপারে তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, এর ফলে ভারতে বিচার বিভাগের সার্বিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ‘ব্যর্থ’ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দিল্লিতে বিচারপতি জে চেলামেশ্বরের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

বিচারপতি চেলামেশ্বর বলেন, ‘আদালতের প্রশাসনিক বিষয়টি জানাতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তাকে জানানো হয়েছিল কোনও কিছুই ঠিকঠাক চলছে না। এর একটা বিহিত দরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্য এটাই যে, আমাদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।’ গণতন্ত্রের অস্তিত্ব সঙ্কটের আশঙ্কা প্রকাশ করে বিচারপতি জে চেলামেশ্বরের মন্তব্য, এখন দেশ ঠিক করুক প্রধান বিচারপতিকে ইমপিচ করা উচিত কিনা।