ডেইলি সাবাহ

আফরিনের মুক্ত এলাকাগুলোতে ফিরছেন বেসামরিকরা

কুর্দি বিদ্রোহী অধ্যুষিত সিরিয়ার আফরিন শহরের কেন্দ্রস্থল ঘিরে ফেলেছে তুরস্কের সেনাবাহিনী। বিদ্রোহীদের দখল থেকে সেখানকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা মুক্ত করেছে তুর্কি সমর্থিত ফ্রি সিরিয়ান আর্মি। এদিকে আফরিনের মুক্ত এলাকাগুলোতে ফিরতে শুরু করেছেন বেসামরিকরা। দীর্ঘ সংঘাতের কারণে এক সময় নিজ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গিয়েছিলেন এসব মানুষ। এ বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার শিরোনাম করেছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ।

Daily Sabahআফরিনে তুর্কি সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরুর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সফলতার মুখ দেখতে পায় তুর্কি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগী ফ্রি সিরিয়ান আর্মি (এফএসএ)। এরইমধ্যে তারা আফরিন ঘিরে ফেলেছে। তারা আফরিনের মূল শহরের বাইরে অবস্থান নিয়ে শহরটিতে প্রবেশের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যেই অনেক শহর ও গ্রাম কুর্দি বাহিনীর হাতছাড়া হয়েছে।

তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইয়েলদ্রিম বলেছেন, দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় আফরিন সীমান্ত ঘিরে ফেলেছে তুরস্কের সেনাবাহিনী। সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সন্ত্রাসীদের সব আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

ক্ষমতাসীন দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির প্রাদেশিক সম্মেলনে বিনালি ইয়েলদ্রিম বলেন, তুর্কি সশস্ত্র বাহিনী, বিশেষ বাহিনী, পুলিশ ও ফ্রি সিরিয়ান আর্মি ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছে। তুর্কি বাহিনী সেখানে সফল ও স্থল ও বিমান অভিযান পরিচালনা করছে। আমাদের কুর্দি সেনারা আফরিনে ইতিহাস তৈরি করছে।

তিনি বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তার বিরুদ্ধে যে কোনও হুমকি মোকাবিলা করবে তুরস্ক।

তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানেই সন্ত্রাসের হুমকি রয়েছে, সেটিই আমাদের লক্ষ্যবস্তু। আজ আফরিন; কাল হয়তো অন্য কোনও স্থান।

২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি সিরিয়ার আফরিন ছিটমহলে কুর্দি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে তুরস্ক। এর নাম দেওয়া হয় অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ।

সিরিয়ায় কুর্দি বিদ্রোহীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাষ্ট্র। আফরিনে তুর্কি অভিযান শুরুর পর তুরস্কের মার্কিন দূতাবাসের সামনের সড়কের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় অলিভ ব্রাঞ্চ রোড।

সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, তার দেশ সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জয়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। তিনি বলেন, জারাবুলুস ও আল বাবের মতো আফরিন, ইদলিব ও মানবিজেও আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাবো। আমরা চাই আমাদের সিরীয় ভাই ও বোনেরা যেন তাদের নিজেদের ঘরবাড়িতে ফিরতে পারেন।

উল্লেখ্য, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমর্থনে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নিচ্ছে রাশিয়া। আসাদ সরকারের সমর্থনে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়ারাও। আর কুর্দি অধ্যুষিত আফরিনে সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে তুরস্ক। আঙ্কারা বলছে, তারা শহরটিকে সন্ত্রাসীদের করিডোর হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেবে না। আর তা নিশ্চিত করতেই অভিযান চালানো হচ্ছে।