দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

মৃত্যুমুখ থেকে উঠে নোবেল পুরস্কার নিয়ে ঘরে ফেরা

পাঁচ বছরের বেশি সময় আগের কথা। পাকিস্তানে স্কুল থেকে ফেরার পথে তালেবানের হামলায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে কোমায় চলে যেতে হয়েছিল ১৪ বছর বয়সী শিশু মালালা ইউসুফজাইকে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা মালালাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সুদূর যুক্তরাজ্যে। কোমা থেকে বের হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন মালালা। যুক্তরাজ্যেই পড়াশোনা শুরু করে নেন। এরইমধ্যে জিতে নিয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাজ্যে থাকার পর প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের মাটিতে পা ফেলেছেন মালালা। বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য দেওয়ার সময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। জানান, পাঁচ বছর ধরে দেশে ফেরার স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। শুক্রবার (৩০ মার্চ) এ খবরটিকে প্রধান শিরোনাম করেছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। প্রতিবেদনে বলা হয়, মুমূর্ষু অবস্থায় দেশ ছাড়া মালালা দেশে ফিরেছেন সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ীর মর্যাদা নিয়ে।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রথম পাতা
নারী শিক্ষার অধিকার নিয়ে সোচ্চার মালালা ২০১২ সালে তালেবান হামলায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হলেও প্রাণে বেঁচে যান। লন্ডনের এক হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে ওঠেন। পাশ্চাত্য দেশগুলো ফলাও করে ঘটনাটি সামনে আনে এবং ২০১৪ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। বর্তমানে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন মালালা। যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর বুধবার (২৮ মার্চ) দিনগত রাত দেড়টার দিকে প্রথমবারের মতো দেশে ফিরেছেন ২০ বছর বয়সী এ শিক্ষা অধিকারকর্মী। সূত্রকে উদ্ধৃত করে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়, নিরাপত্তাজনিত কারণে তার দেশে ফেরার কথা গোপন রাখা হয়েছিল।

টেলিভিশনে দেওয়া বক্তৃতায় পাকিস্তানে ফেরার স্বপ্নের কথা জানাতে গিয়ে মালালা বলেন, ‘বিশ্বাসই করতে পারছি না আমি এখানে এসেছি। পাঁচ বছর ধরে এ দিনটির স্বপ্ন দেখছি আমি।’

এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন মালালা। বলেন, ‘আমার জন্ম ১৯৯৯ সালে। আমি বেশি কাঁদিনি। তবে আজ আমি কান্না থামাতে পারছি না। আমি জীবনকে সুন্দর করেই দেখছিলাম। এরপর সন্ত্রাসের ভয়াবহতা দেখি। আমাদের সমাজে নারীদের নিগৃহীত হতে দেখি। চিন্তা করতে থাকি কিভাবে এর প্রতিবাদ করা যায়।’ মালালা বলেন, ‘এরপরই আমার ওপর হামলা হয়। আমাকে দেশ ছাড়তে হয়। আমি কখনোই এমনটা চাইনি। কিন্তু তখন সব আপনাআপনিই হচ্ছিলো। আমার কিছু করার ছিল না। সেখানেই চিকিৎসা হয়। পড়াশোনা চলতে থাকে।’