ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসি’র মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের প্রস্তাব করেছে তুরস্ক। ২০১৮ সালের শেষদিকে এ বৈঠক আয়োজনের কথা ভাবছে আঙ্কারা। এ বিষয়টি নিয়ে রবিবার শিরোনাম করেছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।
ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম ইস্যু নিয়ে শুক্রবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ওআইসি’র এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউরোপ এবং এর বাইরে বর্ণবাদ, ইসলামবিদ্বেষ এবং বিদেশিদের সম্পর্কে অহেতুক ভয়ের মতো ব্যাপারগুলো নিয়ে আমরা বিরক্ত।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষে উল্লিখিত বিষয়গুলো নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসি’র বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানান মেভলুত কাভুসোগলু। তিনি বলেন, আমাদের সহকর্মীরা এ বৈঠকের এজেন্ডা ও তারিখ নির্ধারণে কাজ করছেন।
শুক্রবার ব্রাসেলসে ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম ইস্যু নিয়ে আয়োজিত ওআইসি-ইইউ বৈঠকে অংশ নেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ দুই ইস্যুতে বরাবরই সোচ্চার আঙ্কারা।
২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেম নগরীকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি। ট্রাম্পের ঘোষণার পর পরই বিক্ষোভে নামেন ফিলিস্তিনিরা। বিশ্বজুড়ে ঝড় ওঠে নিন্দা আর প্রতিবাদের। ট্রাম্পের ওই ঘোষণার প্রতিবাদে সরব হয় তুরস্ক। এ ইস্যুতে ইস্তানবুলে ওআইসি’র জরুরি সম্মেলন আহ্বান করে আঙ্কারা। ১৩ ডিসেম্বর ওই সম্মেলন থেকে পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ৫৭টি মুসলিম দেশ। একইসঙ্গে তারা জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ট্রাম্পের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেয়।
বাংলাদেশ, তুরস্ক, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কুয়েত ও কাতারসহ মুসলিম দেশগুলোর নেতারা সম্মেলনে অংশ নেন। মুসলিম দেশগুলোর বাইরে ফিলিস্তিনিদের ন্যায়সংগত আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বৈঠকে অংশ নেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, মার্কিন সিদ্ধান্ত অকার্যকর, অবৈধ ও বেআইনি। এ উসকানিমূলক সিদ্ধান্ত থেকে তাদের অবশ্যই সরে আসতে হবে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দ্রুত পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ইসরায়েল একটি দখলদার ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। আর মার্কিন সিদ্ধান্ত হচ্ছে তাদের সন্ত্রাসবাদের পুরস্কার।
জেরুজালেম ইস্যুর ধারাবাহিকতায় এবার ইউরোপসহ দুনিয়াজুড়ে ইসলামবিদ্বেষসহ সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও আচরণের বিরুদ্ধে জোরালো বার্তা দিতে চায় আঙ্কারা।