ইউরোপের নেতৃবৃন্দ যতই পেছনের বিষয় ভুলে গিয়ে অনুরোধ-উপরোধ করছেন সমস্যার সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আদায়ে, ততই মজা পাচ্ছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আটলান্টিকের উভয় তীরের স্বার্থে ট্রাম্পের সমর্থন আদায়ের জন্য ইউরোপীয় নেতাদের ব্যাকুল চেষ্টাকে রীতিমতো ‘ভিক্ষা’ চাওয়া হিসেবে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক টাইমস। তারা ১০ মে ২০১৮ তারিখের মুদ্রিত সংখ্যায় এ সংক্রান্ত সংবাদের শিরোনামে দিয়েছে, ‘ইউরোপ ফাইটস ফর কি ইস্যুস, ডেস্পাইট ট্রাম্প।’ প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ইউরোপের চেষ্টার জবাবে ট্রাম্প প্রথমে মজা করে সব দেখেছেন, তারপর তাদের সঙ্গে থাকার ভান করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত তাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইরানের সঙ্গে থাকা পরমাণু অস্ত্র চুক্তি বাতিল করা নিয়েও ট্রাম্প একই কাজ করেছেন। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি নিয়েও তাই করেছেন তিনি। এমন কি জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের ক্ষেত্রেই ঘটেছে একই ঘটনা।
ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখতে করা ওই চুক্তি বর্জন না করার বিষয়ে ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ও জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। ট্রাম্পকে ইরান চুক্তির বিষয়ে বোঝাতে ম্যাখোঁ ও মার্কেলের যুক্তরাষ্ট্র যাত্রাকে ‘তীর্থযাত্রা’ আখ্যায়িত করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু অস্ত্র বিরোধী চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
একই রকম কাণ্ড ঘটেছিল প্যারিসের জলবায়ু চুক্তি নিয়ে। ২০১৭ সালের জুনে ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছিলেন জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াবে যুক্তরাষ্ট্র।
ঠিক একইভাবে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে জেরুজালেমে স্থানান্তরিত হয়েছে ইসরায়েলের জন্য থাকা যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। এর আগে ইউরোপীয় মিত্রদের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর বসিয়েছিলেন শুল্ক।
এসব উদাহরণ থেকে স্পষ্ট, আটলান্টিকের উভয় তীরের মধ্যে যে সম্পর্ক, তা দুর্বল হয়ে পড়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, ‘ক্ষুব্ধ’ ও ‘অপমানিত’ হলেও ইউরোপীয় বন্ধু রাষ্ট্রলোর নেতৃবৃন্দ ট্রাম্পের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়াতে প্রস্তুত নন। তদের ধারণা ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের চিন্তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যাবে।