দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ

শিশুদের সুরক্ষায় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে চাপে রাখতে হবে

শিশুদের আসক্তি প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কম্পিউটার গেম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায় নিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বিশেষভাবে ফেসবুক ও স্ন্যাপচ্যাটকে দায়ী করেছেন। তাদের বক্তব্য, ফেসবুক এমন কি ৮ বছর বয়সী শিশুদেরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ব্যবহারের জন্য কৌশল খাটাচ্ছে। তারা চায় যত বেশি সময় সম্ভব তত বেশি সময় ব্যবহারকারীদের অনলাইনে ধরে রাখতে। স্ন্যাপচ্যাট টানা ১০০ দিন লগইন  করলে ব্যবহারকারীকে বিশেষ পুরষ্কার দেয়। যুক্তরাজ্যের পত্রিকা ডেইলি টেলিগ্রাফ ১১ জুন ২০১৮ তারিখে মুদ্রিত সংখ্যার প্রধান শিরোনাম করেছে এ বিষয়ে, ‘শিশু-সুরক্ষায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করুন।’Untitled

দাতব্য সংস্থার সংগ্রহ করা তথ্য থেকে বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, সামজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার এবং অনলাইন গেমিং শিশুদের এমন কিছু ক্ষতি সাধন করে যা ধীরে ধীরে হয়, ফলে পরিবারের সদস্যরাও ওই ক্ষতিগুলোকে চিহ্নিত করে উঠতে পারেন না।  তাদের মতে, বর্তমানে শিশু সুরক্ষায় যেসব ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে, সেগুলো যথেষ্ট নয়। দাতব্য সংস্থা বার্নার্ডো জানিয়েছে, মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ইন্টারনেট আসক্তি, যৌনাত্মক বার্তা আদান-প্রদান ও অনলাইনে হেনস্তা হওয়ার মতো ঘটনা বাড়ছে। দাতব্য সংস্থার তথ্য এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ডেইলি টেলিগ্রাফ তাই শিশু সুরক্ষায় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠাগুলোকে আইনগতভাবে বাধ্য করার আহ্বান জানিয়েছে।

‘ন্যাশনাল সোসাইটি ফর দ্যা প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলিটি টু চিলড্রেনের’ (এনএসপিসিসি) পরিচালনা প্রধান পিটার ওয়ানলেস বলেছেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাটাকে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে দেখে আসছে। শিশুদের সুরক্ষায় বাস্তব জীবনে যেরকম আইনি নিশ্চয়তা রয়েছে, অনলাইনে তা নেই।’ তিনিও শিশুদের সুরক্ষায় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠাগুলোকে বাধ্য করতে আইন প্রণয়নের ওপর জোর দেন।

‘রয়েল কলেজ অফ পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড চাইল্ড হেল্থ’ জানিয়েছে, ইন্টারনেটে আসক্ত শিশু-কিশোরদের মধ্যে বিষণ্ণতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।  ডেইলি টেলিগ্রাফ তাদের অনুসন্ধানে দেখেছে:

যুক্তরাজ্যের অন্তত এক চতুর্থাংশ স্কুলগামী শিশু দিনে ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ইন্টারনেটে ব্যয় করে। এদের ৪ শতাংশের ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতা আসক্তির পর্যায়ে চলে গিয়েছে।

গত ৫ বছরে ইন্টারনেটে হয়রানির শিকার হয়ে সাহায্য চাওয়া শিশুদের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ভুক্তভোগীদের অনেকেই বিষণ্ণতায় ভুগছে, এমন কি আত্মহত্যাও করছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সূত্রে ঘনিষ্ঠ হয়ে শিশুদের ব্যবহার করতে চাওয়ার অভিযোগে গড়ে প্রতিদিন ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ‘যৌনাত্মক যোগাযোগের’ বিষয়ে গত বছর নতুন আইন পাস হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত নথিভুক্ত অপরাধের ঘটনা ১ হাজার ৬২৮টি।