দ্য গার্ডিয়ান

কিমকে রাজি করাতে সামরিক মহড়া স্থগিতের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

১২ জুন সিঙ্গাপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে। আর তার বদলে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া স্থগিত রাখবে। এই সমঝোতা ততদিন কার্যকর থাকবে যতদিন উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের শর্ত মেনে চলবে। যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত বিরতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালায়। কোরীয় উপদ্বীপে চলা ওই সামরিক মহড়াকে আক্রমণের হুমকি হিসেবে দেখে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে হওয়া যৌথ মহড়াকে ট্রাম্প ‘যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, ওই  খেলায় অনেক বেশি ব্যয় হয় যার বেশিরভাগটাই যুক্তরাষ্ট্রের ঘাড়ে পড়ে!  যুক্তরাজ্যের পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান ১৩ জুন ২০১৮ তারিখে মুদ্রিত সংখ্যার প্রধান শিরোনাম করেছে এ বিষয়ে, ‘কিমকে রাজি করাতে সামরিক মহড়া স্থগিতের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের।’Untitled-1

১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ও দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষে যুদ্ধ জড়িয়ে পড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র । উত্তর কোরিয়ার জন্য ভয়ঙ্কর ধ্বংসলীলা ডেকে নিয়ে আসা ওই যুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রবল অবিশ্বাসের চোখে দেখে উত্তর কোরিয়া। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়াকে নিরাপত্তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে নিয়মিত সামরিক মহড়া করে। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরেই উত্তর কোরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।  এরকম অবস্থায় কিম জন উনকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে রাজি করাতে যুক্তরাষ্ট্রও তাদের বড় একটি দাবি মেনে নিয়েছে—দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া আপাতত আর করবে না তারা।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান লিখেছে, প্রথমদিকে যুক্তরাজ্য এরকম কোনও ছাড় দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহী ছিল না। কিন্তু সিঙ্গাপুর সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তার শর্তগুলো আগে হওয়া চুক্তির মতোই সাধারণ। সেগুলো থেকে বিশেষভাবে নিশ্চিত হওয়ার মতো কোনও ধারা পানানি সাংবাদিকরা। তাই এবারের চুক্তিতে বিশেষ কি আছে জানতে চেয়ে ট্রাম্পের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন তারা।

জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা একে অপরকে খুব কাছ থেকে চিনেছি। আমি ভালো করেই বুঝতে পারি, কে সমঝোতা চায়, আর কে চায় না।’ ট্রাম্প আরও বলেছেন, চুক্তি স্বাক্ষর হয়ে যাওয়ার পরও তিনি কিমের কাছে যা চেয়েছেন, কিম তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ট্রাম্পের ভাষ্য, তিনি কিমকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিন পরীক্ষাগার বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিতে অনুরোধ করেছিলেন।  কিম তাতে রাজি হয়েছেন। পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হ্যামহাংয়ে অবস্থিত পরীক্ষাগারটি বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেছেন। গার্ডিয়ান লিখেছে, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে সুনির্দিষ্ট কোনও ধারা থাকার কথা জানা না গেলেও, কিমকে উৎসাহী করে তুলতে ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক মহড়া বন্ধ রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।