দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল

হুয়াওয়ের বিষয়ে কানাডাকে সতর্ক করেছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা

হুয়াওয়ের বিষয়ে সতর্ক হওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারি বিষয়ক কমিটির সঙ্গে জড়িত জ্যেষ্ঠ সিনেটররা কানাডার সরকারকে বার্তা পাঠিয়েছেন। মার্কিন সিনেটরদের বক্তব্য, চীনের বৃহৎ টেলিকম প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের প্রস্তুত করা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা নিরাপদ নয়। কানাডা হুয়াওয়ের পণ্য ব্যবহার করে তাহলে তা দেশটির মিত্রদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে। কারণ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটির যন্ত্রপাতি দিয়ে খোদ কানাডার ওপরেই নজরদারি করা হতে পারে। এমন কি হঠাৎ করে নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে। কানাডা ‘ফাইভ আই’ নামের ৫টি দেশের একটি আন্তর্জাতিক নজরদারি জোটের সদস্য। তারা একে অপরের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করে। কানাডার পত্রিকা দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল ১৮ জুন ২০১৮ তারিখে মুদ্রিত সংখ্যার প্রধান শিরোনাম করেছে এ বিষয়ে, ‘ইউএস লমেকার্স ওয়ার্ন কানাডা অ্যাবাউট হুয়াওয়ে।’Untitled-1

মার্কিন রিপাবলিকান সিনেটর টম কটন এবং ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর মার্ক ওয়ারনার গ্লোব অ্যান্ড মেইলকে বলেছেন, হুয়াওয়ে যে পরবর্তী প্রজন্মের উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থার জন্য কাজ করছে তাকে অনেক বড় ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করছেন তারা। দেশটি ফাইভ জি প্রযুক্তির ইন্টারনেট ব্যবস্থার পথিকৃৎ হয়ে ওঠার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। ফাইভ জি প্রযুক্তি বাস্তবায়িত হলে মোবাইল নেটওয়ার্কে প্রায় ব্রডব্যান্ডের সমান গতি পাওয়া সম্ভব হবে। প্রতিষ্ঠানটি ফাইভ জির পাশাপাশি চালকবিহীন গাড়ির প্রযুক্তি নিয়েও কাজ করছে।

গ্লোব অ্যান্ড মেইল তাদের নিজস্ব অনুসন্ধানে দেখেছে কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়, সরকার এবং ফোন কোম্পানিগুলো হুয়াওয়েকে সহায়তা করছে। টেলিকম পণ্যের ব্যবসায় হুয়াওয়ে এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। দ্রুত গতির তারবিহীন ইন্টারনেট প্রযুক্তি বাস্তবায়নের জন্য তারা অনেকগুলো পেটেন্ট আবেদন করেছে যেগুলোর জন্য গবেষণার কাজ করে দিয়েছে কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ৬টি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান এবং কানাডার গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক ৩ প্রধান সম্প্রতি হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

মার্কিন সিগনালস ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির প্রধান নাকাসোন নজরদারি বিষয়ক সিনেট কমিটিকে জানিয়েছেন, হুয়াওয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সিদ্ধান্ত মেনে চলতে বাধ্য। ২০১৭ সালে প্রণীত চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ৭ম ধারায় সকল চীনা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় গোয়েন্দা কার্যক্রমের প্রতি সহযোগিতাপূর্ণ ভূমিকা রাখতে বলা হয়েছে। ওই আইন অনুযায়ী চীনা গোয়েন্দা তৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য গোপন রাখতেও বাধ্য চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো।

ডেমোক্র্যাট সিনেটর অ্যাডাম স্কিফ বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অর্থনীতি এতো গভীরভাবে একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে যে যে হুয়াওয়ের কারণে কানাডার সাইবার সিকিউরিটি ঝুঁকিগ্রস্ত হলে তা যুক্তরাষ্ট্রকেও বিপদে ফেলবে।’ তার ও রিপাবলিকান সিনেটর মাইক কোনাওয়ের মন্তব্য, যে দেশেই হুয়াওয়ের পণ্য বিক্রি হয় সে দেশেরই জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হওয়া উচিত। গ্লোব অ্যান্ড মেইল লিখেছে, বর্তমানে কানাডার সবগুলো বড় ফোন কোম্পানি হুয়াওয়ের তৈরি মোবাইল ফোন বিক্রির জন্য ব্যাপক মাত্রায় প্রচারণা চালাচ্ছে।