দ্য স্টার

একাধিক অভিযোগের মুখে নাজিবসহ অন্যরা

ওয়ান এমডিবি আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাবেক মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকসহ অন্যরা হয়তো একাধিক অভিযোগের মুখে পড়তে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমনটাই জানিয়েছেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। এ বিষয়টি নিয়ে বুধবার শিরোনাম করেছে মালয়েশিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার।
The Starমাহাথির বলেন, তাদের বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপ, সরকারি অর্থ চুরি, সরকারি অর্থ হ্রাস, অর্থের ব্যবহার, ঘুষ এবং আরও কয়েকটি অভিযোগ আনা হতে পারে।

জানা গেছে, নাজিবের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগও দায়ের করা হতে পারে।

২০০৯ সালে মালয়েশিয়ায় নতুন অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য ওয়ান মালয়েশিয়া ডেপেলপমেন্ট বেরহাদ বা ওয়ান এমডিবি তহবিলটি গঠন করা হয়। নাজিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদের (ওয়ানএমডিবি) অর্থ আত্মসাৎ করে তিনি নিজ ব্যাংক হিসাবে জমা করেছেন। নাজিবের শাসনামলে কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনায় তাকে নির্দোষ ঘোষণা দেয়। তবে নির্বাচনের আগে বিরোধী জোট প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ক্ষমতায় এলে নাজিবের দুর্নীতির তদন্ত করা হবে।

নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ১০ মে শপথ নিয়েই মাহাথিরের নেতৃত্বে বিরোধী জোট ক্ষমতা নিয়েই নাজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেয়। তার দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। গত ১৩ জুন মালয়েশিয়ার নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল টমি থমাস জানান, দেশটির দুর্নীতিবিরোধী কমিশনের (এমএসিসি)’র কাছ থেকে ওয়ান এমডিবি সংক্রান্ত তদন্তের কাগজপত্র পাওয়ার পর নাজিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সম্পদ আত্মসাতের দায়ে নাজিবের বিরুদ্ধে মালয়েশীয় পেনাল কোডের আওতায় অভিযোগ দায়ের করা হতে পারে। এ ব্যাপারে মিডিয়ায় কথা বলার অনুমতি না থাকায় নিজের পরিচয় প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ওই সূত্র। দোষী সাব্যস্ত হলে নাজিবের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে পারে। এ মামলায় দোষী সাব্যস্তকে বেত্রাঘাতেরও বিধান রয়েছে। তবে ৫০ বছরের বেশি বয়সীদেরকে বেত্রাঘাত করা হয় না। অপরাধের মাত্রা এবং আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণের উপর নির্ভর করে জরিমানা নির্ধারণ করা হয়।

অর্থ পাচারের অভিযোগে তার সর্বোচ্চ ১৫ বছরের জেল হতে পারে। পাশাপাশি যে পরিমাণ অর্থ পাচার করা হয়েছে তার অন্তত পাঁচ গুণ জরিমানা করা হতে পারে।

তদন্তকারীদের সুপারিশগুলো গ্রহণ করা হবে কি হবে না, ভিন্ন কোনও অভিযোগ দায়ের হবে কিনা কিংবা আরও তদন্ত হবে কিনা-সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেলের ওপর নির্ভর করছে।

ওয়ানএমডিবি আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তদন্ত চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, ওয়ানএমডিবি তহবিল থেকে ৪৫০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭০ কোটি ডলার গেছে নাজিবের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে।