দ্য গার্ডিয়ান

নাইন ইলেভেন পরবর্তী সময়ে বন্দি নির্যাতনে শামিল ছিল যুক্তরাজ্য

নাইন ইলেভেন পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ তে শামিল হয়ে বন্দিদের অপহরণ ও তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ মন্ত্রী ও গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিরা এসব নির্যাতনের ঘটনায় শামিল ছিলেন। বৃহস্পতিবার (২৮ জুন) যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তাবিষয়ক সংসদীয় কমিটির (আইএসসি) দুইটি প্রতিবেদনে এসব কথা প্রকাশ পেয়েছে। কেবল তাই নয়, গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদেরকে কমিটির কাছে প্রমাণ উপস্থাপনে বাধা দেওয়ায় তোপের মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-ও। শুক্রবার (২৯ জুন) এ খবরটিকে প্রধান শিরোনাম করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রথম পাতা
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিমান হামলার পর সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদা ও তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। আটক আল-কায়েদা ও তালেবান সদস্যদের রাখার জন্য সে সময় নির্মাণ করা হয় গুয়ানতানামো বন্দিশালা। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের অভিযোগ, কারাগারটির বেশির ভাগ বন্দিকেই বিনা অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। এ ছাড়া তাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হতো। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। নানা সময়ে বন্দিদের উপর নির্যাতন ও তাদের অধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ তুলেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। আরেকটি অভিযোগ হলো সেখানে বন্দিদের বিনা বিচারে আটক রাখা হয়। সে অভিযোগের কাতারে শামিল হয়েছে যুক্তরাজ্যও। 

যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তাবিষয়ক সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো শত শত নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একত্রিত হয়ে ইরাক, আফগানিস্তান ও গুয়ানতানামো বে বন্দিশালায় এসব নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়ানোকে ‘অমার্জনীয়’ অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

চার বছর আগে তদন্ত শুরু করেছিল আইএসসি। কমিটির একটি প্রতিবেদনে ২০০১ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আটক হওয়া ব্যক্তিদের নির্যাতনের ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। আর আরেকটি প্রতিবেদনে সাম্প্রতিক ইস্যুগুলো যুক্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে শুধু জুনিয়র গোয়েন্দা কর্মকর্তাদেরকেই দায়ী করা হয়, শীর্ষ ব্যক্তিদেরকেও যুক্ত করা হয়েছে। তবে প্রতিবেদনটিতে উল্লিখিত অভিযোগগুলো মানতে নারাজ সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্ট্র। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী স্ট্রর দাবি এসব অভিযোগের ব্যাপারে তার জানা নেই।