উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন, গণপিটুনি দিয়ে কাউকে হত্যা করা হলে তাকে অপরাধ বলেই গণ্য করবে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার (৩ জুলাই) এক মামলার শুনানি চলার সময় স্পষ্ট করে এ কথা জানিয়ে দেয় শীর্ষ আদালত। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মনে করে, আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নটি রাজ্যের বিষয়; তাই এ ব্যাপারে রাজ্যগুলিকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
ভারতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে সক্রিয় রয়েছে স্বঘোষিত গো-রক্ষকরা। উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাটে তাদের একাংশের তাণ্ডবের শিকার হতে হয়েছে দলিত ও সংখ্যালঘু মুসলিমদের। গো হত্যার গুজব তুলে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বেশ কয়েকজনকে। তাছাড়া সম্প্রতি ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটছে। এমন সময়েই ভারতের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিলো গণপিটুনি দিয়ে কাউকে হত্যা করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের শীর্ষ আদালত গো-রক্ষার নামে অশান্তি রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সব রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি জেলায় একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাকে নোডাল কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তবে গো-রক্ষার নামে সহিংসতা রুখতে আদালতের দেওয়া নির্দেশটি রাজস্থান,হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ সরকার মানছে না-এমনই অভিযোগ করে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন মহাত্মা গান্ধির প্রপৌত্র তুষার গান্ধি।
মঙ্গলবার সেই মামলার রায়দান স্থগিত রেখে শীর্ষ আদালত বলেছে, গরু পাচার কিংবা ছেলেধরা সন্দেহে কাউকে পিটিয়ে হত্যা করা অপরাধ। কোন সময় বা কোন উদ্দেশ্যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা বিবেচনার বিষয় নয়।’ প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ সতর্ক করে বলেছে, "কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না।"
উল্লেখ্য, গো-রক্ষার নামে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রুখতে গত বছর ভারতের ২৯টি রাজ্য ও সাতটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে কড়া পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত। এমনকি, গো-রক্ষা বাহিনীর কার্যকলাপ খতিয়ে দেখতে ওই রাজ্যগুলিকে কর্মকর্তা নিয়োগের কথাও জানায় আদালত।