ডন

পাকিস্তানে বিস্ফোরণে নিহতদের স্মরণে জাতীয় শোক

পাকিস্তানে নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। এ সময় নির্বাচনি সহিংসতা তীব্র হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নির্বাচনি প্রচারণায় বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ। গত শুক্রবার (১৩ জুলাই)  দেশটির বেলুচিস্তান প্রদেশের মাসতুং শহরে হওয়া আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পেতে ১৪৯ জনে উন্নীত হয়েছে। ওই হামলায় নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালানো সিরাজ রাইসানি নিহত হয়েছেন। ওই একই দিনের শুরুতে আরেকটি হামলা চালানো হয় আরেকজন প্রার্থী আকরাম খান দুররানির প্রচার সমাবেশে। এর আগে ১০ জুলাই চালানো আরেকটি হামলায় নিহত হন প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনি প্রচারণা চালানো হারুন বিলোর। এসব হামলায় নিহতদের স্মরণে গত রবিবার পাকিস্তানে জাতীয়ভাবে পালন করা হয়েছে শোক দিবস। পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডন ১৬ জুলাই ২০১৮ তারিখে মুদ্রিত সংখ্যার প্রধান শিরোনাম করেছে এ বিষয়ে, ‘নেশন মৌর্নস ডেথস ইন পোল ক্যাম্পেইন ব্লাস্টস’।

Untitled

 নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি পাকিস্তানে হওয়া বোমা হামলার ঘটনায় ১৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ২০০ জন। নির্বাচনকে সামনে রেখে চালানো বড় হামলার প্রথমটি ঘটে গত ১০ জুলাই। এএনপি  প্রার্থী পেশোয়ারের হারুন বিলোর ওই হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিলেন। তার সঙ্গে নিহত হন আরও ১৯ জন। হারুন বিলোরের বাবা বশির বিলোরকে ২০১২ সালে হত্যার পর যে তেহরিক-ই-তালেবান দায় স্বীকার করেছিল, তারাই হারুন বিলোরকে হত্যার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে। এর পরে ১৩ জুলাই মাজলিস-ই-আমলের প্রার্থী আকরাম খান দুররানিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। দুররানি বেঁচে গেলেও চার জন ওই হামলায় নিহত হন। আর এর ওই দিনই ঘটে মাসতুং শহরে আত্মঘাতী হামলার ঘটনা। সেখানে অন্যান্যদের সঙ্গে নিহত হন নির্বাচনে অংশ নিতে প্রচারণা চালানো প্রার্থী সিরাজ রাইসানি। মাসতুং শহরে হওয়া আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের নিহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১৪৯ জন হলেও এ সংখ্যা বাড়তে পারে। রবিবারই কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন, অনেকে তাদের মৃত স্বজনদের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে কবর দিয়ে দিয়েছে কোনও হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে।

নির্বাচনি প্রচারণায় হামলার ঘটনায় নিহতদের স্মরণে রবিবার পাকিস্তানে অর্ধনমিত রাখা হয়েছিল জাতীয় পতাকা। শোক প্রকাশ করা হয় ১০ জুলাই পেশোয়ারে এবং ১৩ জুলাই মাসতুং ও বানুতে হওয়া সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে। রবিবার নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী নাসিরুল মুল্ক এবং সিনেট চেয়ারম্যান সাদিক সানজরানি সিরাজ রাইসানির পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানিয়েছেন। সেখানে থেকে তারা আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান।

কোয়েটা সফরে গিয়ে ‘পাকিস্তান মুসলিম লীগের’ (পিএমএল-এন) সভাপতি শাহবাজ শরিফ ও ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের’ (পিটিআই) সভাপতি ইমরান খান রাইসানির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। দুই নেতাই মাসতুংয়ে ঘটা ওই বিস্ফোরণকে জাতীয় বিপর্যয় আখ্যা দিয়েছেন।

পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সভাপতি বিলাওল ভুট্টো জারদারি শোক দিবসের সঙ্গে একাত্মতা জানাতে তার পুর্বনির্ধারিত একটি জনসভা বাতিল করেছেন। তিনি এরই মধ্যে পেশোয়ারের হামলায় নিহত ‘আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির’ প্রার্থীর মৃত্যতে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানিয়েছেন। শীঘ্রই তার সিরাজ রাইসানির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা।