টরোন্টো স্টার

‘আমি অপরাধী নই’

কানাডার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশের দায়ে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল পাঁচ বছরেরও বেশি সময় আগে। ওই ব্যক্তি এতগুলো বছর জেলে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ নিজের দেশ হিসেবে গাম্বিয়ার কথা উল্লেখ করলেও, তার সমর্থনে কোনও নথি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। গাম্বিয়ার সরকারও তার দায় নিচ্ছে না। তার বিরুদ্ধে কোন অপরাধের অভিযোগ নেই। কিন্তু কানাডার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেহেতু তার কোনও নথিই নেই, সেহেতু তাকে ছেড়ে দিলে প্রত্যাবাসনের জন্য ডেকে তাকে আর নাও পাওয়া যেতে পারে। এদিকে ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি এতগুলো বছর কারাগারে থেকে কাটিয়ে এখন মুক্তির জন্য আর্তনাদ করেছেন, ‘মুক্তির জন্য তারা যে শর্ত দেবে, আমি মেনে নেব।’ কানাডাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টরোন্টো স্টার ২৬ জুলাই ২০১৮ তারিখে মুদ্রিত সংখ্যার প্রধান শিরনামগুলোর একটি করেছে এ বিষয়ে, ‘এনাফ ইজ এনাফ। আই অ্যাম নট অ্যা ক্রিমিনাল।’Capture

৪৭ বছর বয়সী ইব্রাহিম তৌরে এ সপ্তাহে তার ৬৭তম শুনানিতে উপস্থিত হয়েছেন। কিন্তু এবারও তাকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। সাড়ে পাঁচ বছর জেলে থাকার পর মুক্তি না পাওয়া তৌরে বুধবার টরোন্টো স্টারকে বলেছেন, তার কাছে যা ছিল সবই তিনি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। তিনি চান, তাকে প্রত্যাবাসিত করা হোক। তার ভাষ্য, ‘আমি জানি না এটা কত বছর চলবে। প্রায় ছয় বছর হতে চলল তারা আমার কাছ থেকে আমার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। যথেষ্ট হয়েছে। আমি তো কোনও অপরাধী নই।’

প্রথম চার বছর তাকে উচ্চ নিরাপত্তার কারাগারে থাকতে হয়েছে।  কানাডীয় কর্তৃপক্ষের পরামর্শে তিনি গাম্বিয়ার সরকারের কাছ তার নামে ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যুর আবেদনও করেছেন। কানাডীয় কর্তৃপক্ষ আঙ্গুলেরর ছাপ ও ডিএনএও নিয়েছে।

মুক্তি পেতে কানাডীয় কর্তৃপক্ষের যেকোনও শর্ত মেনে নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন তৌরে। মুক্তির আকুতি জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমাকে যদি তারা অ্যাংকেল ব্র্যাকেট পরিয়ে রাখে তাও আমি পরব। তারা যদি আমাকে প্রতিদিন হাজিরা দিতে বলে, তাও আমি হাজির হব।’

কিন্তু প্রিজাইডিং বোর্ডের সদস্য হ্যারি অ্যাডামিডিস লিখেছেন, তৌরেকে বিশ্বাস করা যায় না। সরকার যদি তার মুক্তির ব্যবস্থা করেও, তাহলে এর কোনও নিশ্চয়তা নেই যে তিনি প্রত্যাবাসনের জন্য ডাকলে ফেরত আসবেন। অ্যাডামিডিস এমন কি এ পর্যন্ত বলেছেন, তৌরে তাকে মুক্ত করার সব প্রচেষ্টা ‘নস্যাৎ’ করে দিচ্ছেন!