দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া

ওয়াশিংটন-মস্কোর মতো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ছে দিল্লি

যুক্তরাষ্ট্রের ৯/১১-এর মতো সন্ত্রাসী বা সামরিক হামলা থেকে সুরক্ষায় ধীরে ধীরে নিজেকে প্রস্তুত করছে ভারত। এ পরিকল্পনার মূল বিষয় হচ্ছে,  বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন ব্যবহার করে কেউ যেন হামলা চালাতে না পারে। পুরনো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বদলে স্থাপন করা হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ভিআইপি নো-ফ্লাই জোনকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। অবাধ্য বিমান ভূপাতিত করারও নীতিতেও আনা হচ্ছে পরিবর্তন। এমনটাই বলছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র। সূত্রের বরাত দিয়ে এ বিষয়টি নিয়ে রবিবার শিরোনাম করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।

TOIপ্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের নেতৃত্বে প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ কাউন্সিল (ডিএসি) এজন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনেছে। নাসমাস-২ নামের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি কিনতে শত কোটি ডলার খরচ হয়েছে। একই সঙ্গে পুরো দিল্লি এলাকার আকাশ প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘ভিআইপি ৮৯ এলাকা’ পুনরায় নির্ধারণের কাজ চলছে। এরমধ্যে পড়বে রাষ্ট্রপতি ভবন, পার্লামেন্ট ভবন, উত্তর ও দক্ষিণ ব্লক। এছাড়া কোনও বিমান ছিনতাইয়ের সন্দেহ হরেল তা ভূপাতিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের আমলাতান্ত্রিক পথও কমিয়ে ফেলা হবে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সন্দেহের ক্ষেত্রেও একই উপায় অবলম্বন করা হবে।

নাসমাস-২ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় ত্রিমাত্রিক রাডার সংযুক্ত রয়েছে। এটি স্বল্প ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও তার উৎক্ষেপণস্থল চিহ্নিত করতে পারে। আকাশে একই সময়ে একাধিক হুমকির বিরুদ্ধেও কার্যকর এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। হামলা মোকাবিলায় ওয়াশিংটনে ব্যবহৃত হয় এই প্রযুক্তি। কয়েকটি ন্যাটো দেশেও একই প্রযুক্তি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েল ও রাশিয়ার নিজস্ব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে।

ভারতের নাসমাস-২ অর্জনের এই চেষ্টা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। পরিকল্পনার আওতায় দুই স্তরের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মোতায়েন করা হবে। এতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও তার বাইরে থেকেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হলে তা প্রতিহত করার ব্যবস্থা থাকবে।

সূত্র জানিয়েছে, আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি প্রায়োগিক। এটা ২ হাজার কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র থেকে দিল্লি ও মুম্বাইয়ের মতো শহর রক্ষায় মোতায়েন করা হবে। আর নাসমাস-২ দিয়ে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান ও ড্রোন মোকাবিলা করা হবে।

এছাড়া ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘রোমিও’ হেলিকপ্টার, আনুষঙ্গিক অস্ত্র, প্রশিক্ষণ কেনার জন্য দুইশ কোটি ডলার বরাদ্দ রেখেছে। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর দুই দেশের মধ্যকার আলোচনায় এই চুক্তি সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাশিয়ার অস্ত্র ও ইরানের তেল কেনা দেশগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞার আগেই ভারত ওয়াশিংটনের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া যাচাই করে দেখতে চায়। ভারতের কিনতে চাওয়া রোমিও হেলিকপ্টার শত্রুপক্ষের সাবমেরিন শনাক্ত ও ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়।

এদিকে, ভারত ২০১৮ সালের শেষ দিকে রাশিয়ার কাছ থেকে ট্রায়াম্ফ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাসহ পাঁচ ধরনের অস্ত্র কিনতে ৩৯ হাজার কোটি রুপির চুক্তি স্বাক্ষর করতে চায়।