দ্য জাপান টাইমস

জাপানে নারী শিক্ষার্থীদের নম্বর কমিয়েছে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

জাপানে টোকিও মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ভর্তির ক্ষেত্র নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা বৈষম্যপূর্ণ আচরণ করেছে। নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ শতাংশের নিচে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়ায় পাওয়া নম্বর থেকে ১০-২০ শতাংশ নম্বর কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০১১ সাল থেকে বেসরকারি টোকিও মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এমন বৈষম্য করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে, বেশিরভাগ নারী শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষে চিকিৎসকের পেষায় নিয়োজিত হন না; তারা বরং সংসার সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এতে চিকিৎসক সংকট তৈরি হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির এমন কর্মকান্ডে জাপান জুড়ে দেখা দিয়েছে নিন্দার ঝড়। জাপানভিত্তিক সংবাদপত্র দ্য জাপান টাইমস ০৩ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মুদ্রিত সংখ্যার প্রধান শিরোনাম করেছে এ বিষয়ে, ‘মেড স্কুল কাট স্কোরস টু রিডিউস ফিমেল এনট্র্যান্টস।’Untitled

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্মকর্তাদের মধ্যে হওয়া দুর্নীতির বিষয়ে চলমান তদন্ত থেকে এ ঘটনার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। যে অভিযোগের তদন্ত চলছে তার জেরে মাসাহিকো উসুই (৭৭) এবং মামোরু সুজুকি (৬৯) বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান ও প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ফুতোসি সানোকে (৫৯) তারা উৎকোচ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তার ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করে নেওয়ার নিশ্চয়তাও দিয়েছেন। বদলে তারা সরকারি অনুদান প্রাপ্তিতে ফুতোসি সানোর সহায়তা চেয়েছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উথাপিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। জাপান সরকারও বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ভর্তি প্রক্রিয়ার তথ্য জমা দিতে বলেছে। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে মূলত তিন ধাপে ভর্তি পরীক্ষা হয়। প্রথমে বহুনির্বাচনি ও পরে লিখিত। সর্বশেষে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় ধাপে নারী শিক্ষার্থীদের নম্বর কেটে রাখার কাজটি করত। জাপান টাইমস জানিয়েছে, ২০১৮ সালে প্রথম ধাপে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৩০৩ জন পরুষ শিক্ষার্থী ও ১৪৮ জন নারী শিক্ষার্থী। কিন্তু তার পরের ধাপে পাস করেছে ১৪১ জন পুরুষ শিক্ষার্থী ও ৩০ জন নারী শিক্ষার্থী।

আগে থেকেই নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি বঞ্চনার বিষয়টি অনুমান করা চিকিৎসকরা এসব তথ্য সামনে আসায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ‘জাপান জয়েন্ট এসোসিয়েশন অব মেডিক্যাল প্রফেশনাল ওম্যানের’ কার্যনির্বাহী সভার সদস্য কিয়োকো তানিবি জানিয়েছেন, এমন বৈষম্যের সন্দেহের কথা তিনি আগেও সরকার ও চিকিৎসকদের সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেউই তেমন একটা গুরুত্ব দেয়নি। তিনি মনে করেন, অন্যান্য মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন বৈষম্য করছে।