দ্য হিমালয়ান টাইমস

সংবিধানের শর্ত পালনে ব্যর্থ হতে পারে নেপালের পার্লামেন্ট

মৌলিক অধিকার বিষয়ক ১৯টি আইন চালু করতে সংবিধান নির্ধারিত ১৮ সেপ্টেম্বরের সময় সীমার মধ্যে তা করতে ব্যর্থ হতে পারে নেপারের পার্লামেন্ট। সংবিধানের ঘোষণা অনুযায়ী তিন বছরের মধ্যে এসব বিল পাস করার কথা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে এতদিন এসব বিল পাস করা সম্ভব হয়নি। এবার সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তার বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। আর এমনটা হলে সংবিধান সংশোধন করতে হতে পারে। সংসদের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, স্বাভাবিক প্রক্রিয়া মেনে চলা হলে এসব আইনগুলো পাস করতে পার্লামেন্টের এক থেকে তিন মাস সময় লাগতে পারে। তবে আইনমন্ত্রীর দাবি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এসব আইন পাস করা হবে।   

দ্য হিমালয়ান টাইমসের ১৩ আগস্ট তারিখের প্রচ্ছদ

সংবিধান অনুযায়ী, নেপালের মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পাঁচদিন পর একটি বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয়। বিলটির ওপর তাত্ত্বিক আলোচনার পর সংশোধনী প্রস্তাবের জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়। সংশোধনের পরিমাণ যত বেশি হয়, বিলটি পাস হতে তত বেশি সময় লাগে। একটি বিল পাস করতে পার্লামেন্টের হাতে দুটি বিকল্প থাকে। পুর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করা বা এ সম্পর্কে সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়। ওই কমিটি বিলটি কার্যকর করার জন্য ১৫ দিন পর্যন্ত সময় নিতে পারে। পরে তা আবারও পার্লামেন্টে পাঠানো হয়।

কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা দ্য হিমালায়ান টাইমসকে বলেন, স্বাভাবিক নিয়ম বাদ দিয়ে বিলগুলো দ্রুত কার্যকর করা হলে সংসদীয় মূল্যবোধের লঙ্ঘন করা হবে।

২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ঘোষিত নতুন সংবিধানে মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত আইনগুলো বাস্তবায়নের জন্য তিন বছর সময় বেঁধে দেওয়া হয়। সেই হিসাবে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। তাই এখন তিন বছরের সময় সীমা এড়ানোর জন্য সংবিধান পরিবর্তন করার দরকার পড়বে।

নেপালের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ভানু ভক্ত ধাকাল সেই আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিলগুলো পাস করার বিষয়ে সরকার চাপের মুখে রয়েছে। তার মতে, মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত ‌১০টি বিল ইতোমধ্যে পার্লামেন্টে নিবন্ধন করা হয়েছে। এগুলো শীঘ্রই উত্থাপন করা হবে।

তিনি আরও জানান, গোপনীয়তা ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা বিষয়ে তিনটি বিলের খসড়া এখনও তৈরি করা হয়নি। কিন্তু মন্ত্রিসভায় এসব বিলের তাত্ত্বিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত আরও তিনটি বিল আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। আর তিনটি বিল পার্লামেন্টে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

আইনমন্ত্রী ধাকাল বলেন, বিলগুলো কার্যকর করতে সরকার দীর্ঘ সময় নেবে না। তিনি বলেন, আমরা  মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত বিলগুলোকে অগ্রাধিকার দেবো। আমার মনে হয় না, সময় সীমার বিষয়টি সমাধান করার জন্য সংবিধান সংশোধন করার প্রয়োজন পড়বে।