গালফ টাইমস

যুক্তরাষ্ট্র আরও অবরোধ আরোপ করলে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত তুরস্ক

তুরস্কে আটক মার্কিন ধর্মযাজক অ্যান্ড্রু ব্রানসনকে মুক্তি দেওয়া না হলে দেশটির ওপর আরও অবরোধ আরোপের মার্কিন হুঁশিয়ারিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে আঙ্কারা। শুক্রবার তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী রুশার পেকান বলেছেন, ওয়াশিংটন আরও অবরোধ আরোপ করলে তাদের ব্যাপারেও একই ব্যবস্থা নেবে আঙ্কারা। এ বিষয়টি নিয়ে শনিবার শিরোনাম করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ টাইমস।

Gulf Timesতুর্কি বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মের মধ্যে থেকে আমাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। এটা অব্যাহত থাকবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রিসভার বৈঠকে তুরস্কের ওপর আরও অবরোধ আরোপের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন। তিনি বলেন, তুরস্ক যদি দেশটিতে আটককৃত যাজক অ্যান্ড্রু ব্রানসনকে মুক্তি না দেয় তাহলে আমেরিকা তাদের ওপর আরও অবরোধ আরোপে প্রস্তুত রয়েছে। তারা যদি তাকে দ্রুত মুক্তি না দেয়, তাহলে আমাদের আরও পরিকল্পনা রয়েছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, অ্যান্ড্রু ব্রানসনকে মুক্তি দিলেও তুরস্ক থেকে স্টিল আমদানির ওপর ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক বহাল রাখা হবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুরস্ক। আটককৃত মার্কিন যাজকের বিষয়টিও আদালতের কাছে ছেড়ে দিতে চায় আঙ্কারা। সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যেই বুধবার ওই মার্কিন যাজকের আপিল খারিজ করে দিয়েছে তুর্কি উচ্চ আদালত। নিজের গৃহবন্দিত্ব ও ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ব্রানসন ওই আপিল করেছিলেন।

এর আগে এ ইস্যুতে গত ১ আগস্ট তুরস্কের আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে হোয়াইট হাউস। তাতেও কাজ না হওয়ায় আরেক দফায় ব্রানসনের মুক্তির চেষ্টা চালান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হলে তুরস্কের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ওই ঘোষণার পর তুর্কি লিরার দরপতন ঘটলে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন করে বাড়তি উত্তেজনা তৈরি হয়। তুর্কি লিরা’কে শক্তিশালী অবস্থানে নিতে উদ্যোগী হন কর্তৃপক্ষ। জনগণকে তাদের কাছে গচ্ছিত ডলার ও ইউরো ভাঙিয়ে তুর্কি মুদ্রা লিরা গ্রহণের আহ্বান জানান এরদোয়ান। আইফোনসহ বিভিন্ন মার্কিন পণ্য বর্জনের ডাক দেন তিনি।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১৫ আগস্ট বুধবার জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং ১৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ’র সঙ্গে কথা বলেন এরদোয়ান। ১৫ আগস্ট আঙ্কারায় তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানি’র সঙ্গে। বৈঠকের পর তুর্কি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে দেশটিতে এক হাজার ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেন কাতারের আমির। ওই ঘোষণার পরই তুর্কি মুদ্রা লিরার দামে ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হয়।